সীমান্তে গোলাগুলি: পাকিস্তান–ভারতের নিহত ৭

Slider সারাবিশ্ব


ঢাকা: সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) টানা আট দিন ধরে গুলির লড়াই চলছে। সীমান্তে গতকাল শুক্রবার রাতভর গোলাগুলিতে সাতজন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান বলেছে দুই সেনাসহ তাদের চারজন নিহতের হয়েছেন। ভারত বলেছে তাদের তিনজন নিহত হয়েছেন।

পাকিস্তানে আটক ভারতীয় উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ফেরত দেওয়ার পরই দুই দেশের সীমান্তে এমন ঘটনা ঘটল।

ডন ও জিয়ো নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে পাকিস্তানের দুই সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) ভারতীয় সেনাবাহিনীর চালানো গুলিতে সেনাসদস্যের পাশাপাশি দুজন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানায়।

পাকিস্তানের আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লাইন অব কন্ট্রোলে নাকিয়াল সেক্টরে ভারতীয় বাহিনীর ছোড়া গুলিতে দুজন সামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত দুজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহত দুই সেনাসদস্য হলেন হাবিলদার আবদুর রব ও নায়েক খুররম। ভারতীয় বাহিনীর হামলায় পর পাকিস্তানও পাল্টা গুলি ছুড়েছে এবং সীমান্তে পাকিস্তান বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে বলেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

সেনাসদস্যদের নাম জানালেও বেসামরিক লোকদের নাম প্রকাশ করেনি পাকিস্তান।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, আট দিন ধরে সীমান্তে গোলাগুলি চলছে। ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার নিয়ন্ত্রণরেখায় শুক্রবার রাতভর গোলাগুলি হয়েছে। এতে একজন নারী ও তাঁর দুই সন্তান নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন কয়েকজন। পুলিশ বলেছে, ওই নারীর নাম রুবানা কোসার (২৪), তাঁর পাঁচ বছর বয়সী শিশুসন্তান ফাজান এবং মাত্র নয় মাসের কন্যা শবনম। নিয়ন্ত্রণরেখার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত সব স্কুল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

এনডিটিভির খবরে দাবি করা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সালত্রি গ্রামে পাকিস্তানের বোমায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগে পুঞ্চের মানকোট এলাকায় সীমান্তে একজন নারী আহত হন। মানকোট ও সালত্রি ছাড়াও পাকিস্তানি বাহিনী কৃষ্ণাঘাঁটি ও বালাকোট এলাকার গ্রামগুলোকেও নিশানা করে রেখেছে।

দুই দেশের সর্বশেষ সংকটের শুরু গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে।

এই ঘটনার ১২ দিন পর গত মঙ্গলবার ভোরে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, ওই হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদের বড় ঘাঁটি গুঁড়িয়ে গেছে। নিহত হয়েছে ৩০০ জঙ্গি। জঙ্গি ঘাঁটিতে আকাশপথে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী।

এদিকে সেই হামলার পরদিনই ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে পাকিস্তানের একাধিক যুদ্ধবিমান। তার মধ্যে ছিল এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। পরে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ দেশের সৈন্য ঘাঁটিই ছিল পাকিস্তানের আক্রমণের লক্ষ্য। কিন্তু তা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *