ঢাকা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আদালতের রায় লেখায় বাংলা ভাষা ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আদালতের রায় লেখা হয় ইংরেজিতে। সেই রায়ের অর্থ বুঝতে আইনজীবীদের কাছে ছুটতে হয় বিচারপ্রার্থীদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে ভাষা আমরা সবাই বুঝতে পারি, সেই ভাষায় লেখা উচিত। আর বাংলায় রায় লিখে সেটা ইংরেজিতে ট্রান্সলেশন করেও দিতে পারেন। আমরা মনে করি আমাদের যারা আদালতে আছেন, তারা যদি মাতৃভাষায় লেখার অভ্যাসটা করেন, সেটা অন্তত আমাদের মত সাধারণ মানুষ, তাদের খুব সুবিধা হবে রায়টা পড়ে বোঝার।’
যারা ইংরেজিতে রায় লিখতে চান তাদের সহজ ইংরেজি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ আমি বলব, আদালতের রায়টা যদি কেউ ইংরেজিতে লিখতে চান লিখতে পারেন। কিন্তু একটা শর্ত থাকবে, এটা বাংলা ভাষায় প্রচার করতে হবে, প্রকাশ করতে হবে এবং যিনি রায় পাবেন তিনি যেন পড়ে জানতে পারেন। নাহলে তিনি (আইনজীবী) যা বোঝাবেন তাই সে (বিচারপ্রার্থী) বুঝবে। নিজে পড়ে জানার কোনো সুযোগ তার থাকে না। ফলে অনেক সময় তাকে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়।’
উল্লেখ্য, ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন- ১৯৮৭’ এর তৃতীয় ধারায় বলা আছে, ‘বাংলাদেশের সর্বত্র তথা সরকারী অফিস, আদালত, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সাথে যোগাযোগ ব্যতীত অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন আদালতের সওয়াল জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগত কার্যাবলী অবশ্যই বাংলায় লিখিতে হইবে।’
তবে এই আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় আদালতসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরকে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। বর্তমানের আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খায়রুল হক হাই কোর্টের বিচারপতি হিসেবে ২০০৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলায় মামলার রায় লেখা শুরু করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি হওয়ার পরও তা চালু রেখেছিলেন তিনি।