আলোচিত হ্যাপিকে নিয়ে যা বললেন নির্মাতারা

টপ নিউজ বিনোদন ও মিডিয়া

 happy-ঢাকা: হ্যাপি নাজনীন (নাজনীন আক্তার হ্যাপি) ঢাকাই চলচ্চিত্রের একজন উঠতি চিত্রনায়িকা। তিনি বিজ্ঞাপন চিত্রেও কাজ করেছেন। তাই বলে কি তিনি কাউকে ভালোবাসার অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন? তার কি বিয়ে হতে পারে না? সবার মতো হ্যাপিও স্বপ্ন দেখেছেন ভালোবেসে ঘর বাঁধার। সেই স্বপ্নই হ্যাপির জন্য এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাকে নিয়ে গেছে অন্ধকারে।

হ্যাপি ভালোবেসেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেনকে। ফেসবুকে পরিচয় হলেও এক সময় তাদের মধ্যে তৈরি হয় ভালোবাসার সম্পর্ক। তা দিনে দিনে ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়। তবে বিয়ের আগে ঘনিষ্ঠ হওয়ার ইচ্ছা ছিল না হ্যাপির। এমনটাই জানান তিনি। কিন্তু আবেগের উচ্ছ্বাসে এক সময় দুজনের মধ্যে সব ব্যবধান ঘুচে যায়। এক পর্যায়ে হ্যাপি বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন রুবেলকে। তবে নানা টালবাহানায় হ্যাপিকে বারবার এড়িয়ে গেছেন রুবেল। আগে ক্যারিয়ার গুছিয়ে নেবেন, তারপর বিয়ে হবে তাদের, এমনটাই কথা দিয়েছেন রুবেল।

তবে সবশেষে প্রশ্ন দাঁড়ায় হ্যাপির মিডিয়ায় কাজ করা নিয়ে। মিডিয়ায় কাজ করে বলে তাকে অপবাদ দেওয়া হয় খারাপ বলে। তবুও হ্যাপি ভালোবাসার মানুষকে আপন করে পেতে এ অপবাদকে মেনে নিয়েছেন। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন চলচ্চিত্রের নায়িকা হওয়ার- সেটিও বির্সজন দিয়ে মিডিয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছিলেন হ্যাপি। তাতেও বিয়ে করতে রাজি হননি রুবেল। হ্যাপি নিজের সব হারিয়ে শেষ পর্যন্ত থানায় মামলা করেন। তার এ বির্সজন সত্ত্বেও এখন হ্যাপিকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে নানান প্রশ্নের।

‘মিডিয়ার মেয়েরা খারাপ হয়। এদের বিয়ে করা যাবে না।’ আসলেই কি মেয়েরা মিডিয়ায় কাজ করলে খারাপ হয়ে যান? হ্যাপি প্রসঙ্গে অনেকেই এ কথার পক্ষেই বলছেন। তবে এমন অভিযোগকে মনগড়া ও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন দেশের খ্যাতিমান তিন চলচ্চিত্র নির্মাতা। যারা এ উঠতি নায়িকাকে নিয়ে কাজ করেছেন।

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘রুবেল বলেছেন, ‘মিডিয়ার মেয়েরা খারাপ।’ এ কথাটা একদম ঠিক নয়। মিডিয়ার মেয়েরা কি ঘর সংসার করে না। রুবেল কি আগে জানেনি যে হ্যাপি মিডিয়ায় কাজ করেন। এসব জেনে তিনি কেন তার সঙ্গে জড়ালেন। তিনি মেয়েটাকে এ রকম বিপদে ফেলে নিজেকে সাধু ভাবছেন। হ্যাপির জীবনটাকে হুমকির মুখে ফেলেছে এই রুবেল। রুবেল নিজেকে সাধু রাখার জন্যই অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন। একজন পরিচালক হিসেবে এ ঘটনা কিছুতেই মানতে পারছি না। রুবেলের এ রকম কর্মকান্ড এবং তার বক্তব্যের তিব্র নিন্দা জানাই। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন শিল্পীর সঙ্গে যে প্রতারণা করতে পারে তিনি যে কোনো সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারবেন। কারণ একজন ক্রিকেটারের অনেক ফ্যান থাকতে পারে সেই সুযোগেই হ্যাপির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন রুবেল। তিনি অন্যের সঙ্গেও প্রতারণা করবেন। এ ধরনের ঘটনা আমাদের জাতির জন্য দুঃখজনক। আমরা চাই না, এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটুক।

জনপ্রিয় পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিককের হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক হ্যাপির। তিনি হ্যাপি প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ ধরনের কথা বলা একদম ঠিক হয়নি। ঢালাওভাবে সকল মিডিয়ার মেয়েদের খারাপ বলতে পারেন না রুবেল। তিনি তো জেনে শুনেই মিডিয়ার মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছিলেন। এখন তিনি এ ধরণের মন্তব্য করতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এ বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে চাই না। এটার রায় বাংলাদেশ বিচার বিভাগ দিবেন। আমি এর বিচার চাই।’
নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি মনে করি রুবেলকে শুধু জাতীয় দল থেকে বাদ দিলেই হবে না, তাকে এ জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। ‘মিডিয়ার মেয়ে’ কথাটার মানে কি? সেতো মেয়ে। মাওতো মেয়ে, বোনওতো মেয়ে। মিডিয়ার মেয়ে কি একটা গালি? হ্যাপি মেয়ে বলে ওকে নিয়ে এতটা বাড়াবাড়ি করছে সবাই। তাদের যে ঘনিষ্ঠতা হয়েছে তাতো দুজনের সম্মতিতেই হয়েছে। রুবেল এটাকে শুধু সর্ম্পকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছে। আর হ্যাপি চেয়েছে বিয়েতে গড়াতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাপির সঙ্গে আমিও বলছি, রুবেলের বিচার চাই। হ্যাপি মিডিয়ায় কাজ করে বলে বলছি না। হ্যাপি একজন মেয়ে, সে মায়ের জাত বলেই আমি ওর সঙ্গে একমত পোষণ করছি। একটা মেয়ে কখন ব্যক্তিগত বিষয়কে সবার সামনে আনে? যখন তার আর কিছু করার থাকে না, তখনই শুধু সে মুখ খুলতে বাধ্য হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *