গাজীপুর-২ আসনে সাবেক মেয়র পুত্র রনিকে নিয়ে বিএনপিতে অস্বস্তি!

Slider টপ নিউজ সারাদেশ

গাজীপুর: গাজীপুর-২(সদর-টঙ্গী) আসনে বিএনপির চিঠি পেয়েছেন দুই জন। একজন গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সালাউদ্দিন সরকার আরেকজন সাবেক মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে মঞ্জুরুল করিম রনি। দুই জনের রাজনৈতিক জীবন, রাজনৈতিক ত্যাগ ও তৃনমূলে গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। রাজনীতির মাঠে ময়দানে অনুপস্থিত হওয়ায় রনিকে নিয়ে বিএনপি অস্বস্তিতে রয়েছে বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ রনি বিএনপিতে কি পদে আছেন তা কেউ জানেন না।

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন তালুকদার বলেছেন, বিএনপিতে রনির কোন পদ নেই। তবে দল মনোনয়নের চিঠি দিয়েছেন তাই আমরা আছি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের প্রথম মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে মঞ্জুরুল করিম রনি। বাবা মেয়র থাকাকালীন সময়ে তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন সব সময়। রাজনীতিতে তার তেমন কোন উপস্থিতি ছিল না। বিএনপিতে তার কি পদ তাও অনেকে জানেন না। সাবেক মেয়র অধ্যাাপক এম এ মান্নানের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা শুরু হলে একটি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তিনি আসামী হন। এরপর বিদেশে চলে যান। কখন কোন দেশে ছিলেন তা স্পষ্ট ভাবে কেউ না জানলেও বিদেশে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে একাধিক ছবি তিনি তার ফেইসবুক ওয়ালে পোষ্ট করেছেন।

এই অবস্থায় বছর খানেক আগে থেকে মঞ্জুরুল করিম রনি নানা মাধ্যমে নির্বাচন করবেন বলে প্রচার প্রচারণাও চলে। গত মেয়র নির্বাচনের সময় রনি গাসিকের মেয়র প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেন। এর আগে ও পরে তিনি গাজীপুর-১ আসন থেকে এমপি প্রার্থী হবেন বলে প্রচার প্রচারণাও চালান। সবশেষে রনি গাজীপুর-২ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন চান। মনোনয়ন বোর্ডে রনি উপস্থিত ছিলেন। দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ ও সাক্ষাৎকার পর্ব চলাকালে ঢাকার নয়াপল্টন এলাকায় রনি মিছিলেও নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে ছবি প্রচার হয়েছে। কিন্তু গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় রনি গাজীপুর রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। তার পক্ষে বিএনপির নেতারা মনোনয়নপত্র জমা দেন।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় রনি কেন উপস্থিত ছিলেন না? এই প্রশ্নের জাবাব দলীয় নেতারা দিতে না পারলেও তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি গাজীেপুরে আসেননি বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা আছে বলে জানা গেছে।

একটি গোপন সূত্র বলছে, গ্রেপ্তার এড়াতে রনি গাজীপুরে আসছেন না। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তিনি গাজীপুরে আসবেন।

এমতাবস্থায়, সাবেক মেয়র পুত্র রনির গাজীপুরে বিএনপির হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধীতা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বিএনপি। কারণ দলে কোন পদ পদবী নেই, বিদেশ থেকে এসেই ধানের শীষ নিয়ে এমপি নির্বাচন করতে পারলে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা চরম অস্বস্তিতে পড়ে যান, আর সেটাই হয়েছে গাজীপুরে। এতে ত্যাগী নেতাদের অসম্মান হয় বলেই তারা মনে করেন।

বিএনপির ত্যাগী কর্মীরা মনে করছেন, মাঠে-ময়দানে না থেকে হঠাৎ করে এসেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় রনি তেমন সুবিধা করতে পারবেন না। গাজীপুর-২ আসনে রনি ছাড়াও বিএনপির প্রায় এক ডজন প্রার্থী ছিল। রনি দলীয় চিঠি পাওয়ায় অন্য প্রার্থীরা ও ত্যাগী কর্মীরা হতবাক হয়েছেন।

এই অবস্থায় রনি ধানের শীষ পেলে বিএনপি, বিশ দলীয় জোট এমনকি ঐক্য ফ্রন্টে কি পরিমান প্রভাব ফেলতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এ ছাড়াও গাজীপুর বিএনপিতে মান্নান বনাম অন্যান্য নেতা বলে একটি আভ্যন্তরীন কোন্দল দীর্ঘ দিনের। অধ্যাপক মান্নান প্রার্থী হলে ওই কোন্দল হয়ত মিটে যেতো কিন্তু তার ছেলে হঠাৎ করে এসেই দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করলে ভোটের মাঠে কতটুকু সুবিধা করতে পারবেন তা সময় বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *