শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত লালমনিরহাটের কৃষক

Slider রংপুর

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট: তিস্তা-ধরলা বিধৌত লালমনিরহাট জেলার প্রত্যন্ত এলাকার কৃষক পরিবারগুলো এখন ব্যস্ত শীতকালীন নানা শাক-সবজি চাষে।

অল্প পুঁজিতে লাভ বেশী হওয়ায় মৌসুমী এসব ফসল চাষে দিন দিন বাড়ছে এখানকার কৃষকদের আগ্রহ।

একসময় বছরে দুটি ফসল ঘরে তুলতেন লালমনিরহাটের চাষীরা, কিন্তু লাভজনক হওয়ায় দিন দিন শীতকালীন শাকসবজি চাষের এলাকা বাড়ছে জেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে। অনেকেই ধান চাষের পাশাপাশি সবজি চাষ করে হয়েছেন সফল, সংসারে এনেছন স্বচ্ছলতা।

সবজি গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামের রতন মিয়া, আশরাফুল, মজিবর রহমান সহ অনেকে জানান, গত বছর তাঁরা সকলেই ফুলকপি চাষ করেছিলেন এবং সেসময় বাজারদর ভাল থাকায় ভাল লাভবান হয়েছেন।

গত চার বছর ধরে সবজি চাষ করা একই এলাকার লাভলু মিয়া জানান, গত বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করে প্রায় এক লাখ টাকা মুনাফা পেয়েছিলেন। তাঁর দেখে প্রতিবেশী অনেকেই এখন ঝুঁকছেন সবজি চাষে।

সূর্য ওঠার সাথে সাথেই হাসি মুখেই ক্ষেত পরিচর্যায় নেমে পড়ছেন কৃষাণ-কৃষাণী। লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, শিম, শরিষা, ধনেপাতা, লালশাক, পালংশাক সহ বিভিন্ন প্রকারের শাকসবজির ক্ষেতে সেচ দেয়া, আগাছা নিড়োনোর কাজ করছেন পরিবারের সবাই মিলে।

আদিতমারী উপজেলার কুমড়িরহাট এলাকার আব্দুর রহমান জানান, গতবছরের লাভের অভিজ্ঞতায় এবারো তিনি চার বিঘা জমিতে লাউ ও ফুলকপির চারা লাগিয়েছেন। একারো ভাল ফলন ও লাভের আশা করছেন।

তবে লাভের আশায় ফুলকপি, লাউ, বেগুন, শিম, পালং, ধনে পাতা, লালশাক সহ বিভিন্ন রকমের শাকসবজি চাষ করলেও দাম নিয়ে জেলার কৃষকদের কন্ঠে রয়েছে অনিশ্চয়তার সুর। এছাড়া বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহজ শর্তে কৃষিঋণ পাওয়ার দাবী এখানকার কৃষকদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এবারের শীতকালীন শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা না হলেও গত বছর ৩ হাজার ২ শত পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছিল।

লালমনিরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিধুভূষণ রায় জানান, জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা এবার কাঙ্খিত লাভে ফসল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা তাঁর।

সবজি চাষে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি সহজ শর্তে কৃষিঋণ চান বন্যা-খরাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ জয় করে টিকে থাকা জেলার কৃষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *