‘জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার পেলাম’

Slider জাতীয়

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। সোমবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে কাদের সিদ্দিকীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ঐক্যফ্রন্টের যোগ দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

এদিকে যোগ দেয়ার পর পরই বঙ্গবীর ছুটে যান জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলস্থ চেম্বারে। এসময় বঙ্গবীরকে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমার জীবনের শ্রেষ্ট উপহার এটি। আপনি বঙ্গবীর আমাদের মাঝে এসেছেন এটা অনেক অনুপ্রেরণা যোগাবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবীর বারবার ঝুঁকি নিয়েছেন দেশ মাতৃকার ডাকে। ইতিহাস সৃষ্টিকরা মানুষ তিনি। তিনি বঙ্গবীরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাকে সাথে পেয়ে আমার কোন চিন্তা নেই। আমি এখন অবসরে গেলেও চিন্তা নেই। ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, কাদের সিদ্দিকী শুধু মুক্তিযুদ্ধ করেনি। ঝুঁকি নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। আবার তিনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আরও বড় ঝুকি নেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবীর বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। এ ধরণের ঝুঁকি নেয়ার পরও তিনি এখনও আমাদের মধ্যে আছেন- এটা বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। তিনি বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর সবাই ভেবেছিল আমরা দমে গেছি। আর সামনের দিকে যেতে পারব না; কিন্তু বঙ্গবীর প্রতিরোধ করে দেখিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদেও বাংলাদেশ গর্জে উঠতে পারে।

ড. কামাল আরো বলেন, ঐক্যফ্রন্টে বঙ্গবীরের যোগদানের মধ্য দিয়ে আমরা সবাই অনুপ্রাণীত হয়েছি। তিনি আবারও প্রমাণ করলেন দেশের সব বিপদে তিনি এগিয়ে আসেন।

যোগদান অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু ও মোহাম্মদ শাহজাহান ও গণফোরামের নেতাদের মধ্যে মফিজুল ইসলাম খান কামাল, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আ.ও.ম শফিক উল্লাহ, মুকাব্বির খান, মোশতাক আহমেদ, এম শফিউর রহমান খান বাচ্চু এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পক্ষ থেকে নাসরিন সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী, শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, আমিনুল ইসলাম তারেক এবং ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও ছাত্রনেতাদের মধ্যে রুপু ও মোহাম্মদ উল্লাহ মধু উপস্থিত ছিলেন।

ঐক্যফ্রন্টে যোগদান উপলক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে লড়াই, সংগ্রামের মাত্রা বেড়ে গেল। সমস্ত মেধা, শক্তি দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ও মুক্তির জন্য কাজ করব। বর্তমানে স্বৈরাচারের ভূমিকায় যারা আছেন তাদেরকে হটাতে পারব।

কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, এক সময় আমার দুরবস্থা ছিল। আমার জন্য শেখ হাসিনা পাত্রী খুঁজেছিলেন। তিনি এখনও আমার পাশে আছেন। আমার এমন লড়াই সংগ্রাম কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের আহ্ববানে সাড়া দেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক দিন পরে হলেও বিরোধীদলগুলোকে তিনি ডেকে আলোচনা করছেন। সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আলোচনায় যখন বসা শুরু হয়েছে তখন থেকেই দেশের পরিস্থিতি ভালো হয়েছে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠানে বি চৌধুরীর যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি যোগ দেননি। কারণ তিনি ড. কামালকে সহ্য করতে পারেন না। তিনি ও তার দল দাম্ভিকতার সাথে এগুচ্ছে। মাহি বি চৌধুরীর সংসদে আসার দরকার নেই। কারণ দেশবাসী তাকে চায় না।

অপরদিকে যোগদান উপলক্ষে আ স ম আব্দুর রব আবেগ প্রবণ কন্ঠে বলেন, চলমান লড়াই গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আসার লড়াই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি আমলে না নিলে রেহাই পাবেন না। প্রধানমন্ত্রীর পায়ের নিচে মাটি নেই। এ জন্য ভোট চুরি বা জালিয়াতির জন্য ইভিএম পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছেন তিনি।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, আমাদের দাবি মেনে নিন। দেশকে রক্তাক্ত সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দেবেন না। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মন্টু বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আমরা আশা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *