দাফনের ১৫ দিন পর বাড়ি ফিরলেন ‘মৃত’ ব্যক্তি!

Slider বিচিত্র

‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার লেখনীর মাধ্যমে কবেই সে কাহিনী ফুটিয়ে তুলেছিলেন।

এতো নয় ছিল গল্পকথা। কিন্তু বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটল ভারতের কেরলে। বাস্তবে অবশ্য কাদম্বরী নয় সাজি নামে এক ব্যক্তির জীবনেই ঘটল এমন কাণ্ড।
কেরলের ওয়ানাদের বাসিন্দা সাজি। বয়স প্রায় পঞ্চাশের গণ্ডি ছুঁই ছুঁই। পড়াশোনা খুব বেশি দূর পর্যন্ত করেননি। রাজমিস্ত্রির কাজ করেই চালাতেন সংসার। নিজের রাজ্যে কাজের অভাব, কিন্তু পেট তো আর সে কথা শুনবে না। দু-মুঠো অন্নের সন্ধানে কেরল ছেড়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন কাজের সন্ধানে।

স্বজনরা কেউই জানতেন না কোথায় যাচ্ছেন সাজি। শুধু তারা জানতেন মোবাইলের মাধ্যমেই যোগাযোগ করবেন। সে রকমই কথাবার্তা চলত। কিন্তু মাস কয়েক আগে বিকল হয়ে যায় সাজির মোবাইল। অভাবের কারণে ভিনরাজ্যে চলে আসা সাজির কাছে মোবাইল শুধুই বিলাসিতা। তাই মোবাইল আর সারাননি তিনি।

স্বজনরাও যোগাযোগ করতে পারেননি সাজির সঙ্গে। মাসের পর মাস কেটে যায়। খোঁজ মেলে না সাজির। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন সাজির স্বজনরা। পুলিশের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীকে জানানো হয়, মারা গিয়েছেন সাজি। মর্গে দেহ শনাক্ত করতে যান তিনি। ক্ষত-বিক্ষত একজনের দেহ দেখে নিজের স্বামীকে শনাক্ত করেন সাজির স্ত্রী। এরপর দাফন সম্পন্ন হয় সাজির। দিনটা ছিল ১৬ অক্টোবর।

এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। অবাক কাণ্ড ঘটল দিন দুয়েক আগে। দাফনের ১৫ দিন পর আচমকাই বাড়িতে ফিরে এলেন সাজি। তৎক্ষণে অবশ্য গোটা এলাকাতেই রটে গেছে ওই ব্যক্তির মৃত্যু সংবাদ।

সাজিও অবাক। তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছিল তার পরিজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা। মাত্র কয়েক মাস যোগাযোগ না করতে পারায় যে এহেন কাণ্ড ঘটতে পারে তা ভাবতে পারেননি সাজি নিজেও। স্বামীর দেহ ভুল শনাক্ত করা হয়েছে বুঝতে পেরে লজ্জিত তার স্বজনরা।

তবে অনেকেই আবার বলছেন, এমন কর্মকাণ্ডে নাকি আয়ু বৃদ্ধি পেল সাজির। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। ভিনরাজ্যে কাজে গেলেও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করবেন না বলেই জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *