চলে গেলেন সিলেটের সিংহ পুরুষ প্রিন্সিপাল হাবিব

Slider সিলেট

সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটের সিংহ পুরুষ, ইসলামি আন্দোলনের কিংবদন্তি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির, জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজিরবাজার মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমান চলে গেলেন না ফেরার দেশে (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাইহি রাজিউন)।

আজ শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টায় তিনি সিলেট নগরীর তার নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি ১৯৪৯ সালে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহন করেন।

প্রিন্সিপাল হাবীবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত সিলেটের জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট সরকারী আলীয়া মাদরাসা মাঠে তাঁর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রিন্সিপাল হাবীবুর রহমান দীর্ঘদিন থেকে ডায়াবেটিস ও হাই প্রেশারসহ শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ৭ অক্টোবর তিনি চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন। সেখান থেকে দু’দিন আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন।

১৯৯৪ সালে বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে সারা দেশে ধর্মপ্রাণ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবীবুর রহমান। তার সংগঠন সাহাবা সৈনিক পরিষদের ব্যানারে সিলেটে অসংখ্য সভা-সমাবেশ করেন। এছাড়াও দেশের নাস্তিক-মুরতাদবিরোধি আন্দোলনের সবসময়ই তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

১৯৭৪ সালের জুনে দেশের শীর্ষ আলেমদের তত্ত্বাবধানে সিলেটের কাজির বাজার এলাকায় সুরমা নদীর তীরে প্রতিষ্ঠা করেন ঐতিহ্যবাহী জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার মাদরাসা। দারুল উলুম দেওবন্দের নীতিতে পরিচালিত এই মাদরাসা শুরু থেকেই সিলেবাসে বাংলা, ইংরেজিসহ জাগতিক বিষয় যুক্ত করে নতুন ধারার সূচনা করে।

অভিভক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের রাজনীতি থেকে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ খেলাফত মসজিলের আমির নির্বাচিত হন প্রিন্সিপাল হাবীবুর রহমান। ২০১২ সালে ইসলামি ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশে খেলাফত মজলিসের আমির শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক মৃত্যুবরণ বরণ করার পরে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তে দলের আমির নিযুক্ত হন মাওলানা হাবিবুর রহমান।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক স্ত্রী, চার ছেলে ও তিন কন্যা সন্তানের জনক। তার বড় ছেলে মাওলানা মুসা বিন হাবীব জামেয়া মাদানিয়া কাজির বাজার মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল। দ্বিতীয় ছেলে মাওলানা ইংল্যান্ড প্রবাসী। তৃতীয় ছেলে তারেক বিন হাবীব সিলেট মহানগর ছাত্র মজলিসের সভাপতি, চতুর্থ ছেলে তায়েফ বিন হাবীব ইংল্যান্ড প্রবাসী।

তাঁর বড় জামাতা মাওলানা তাজুল ইসলাম, দ্বিতীয় জামাতা মাওলানা আতাউর রহমান ইংল্যান্ড প্রবাসী, ছোট জামাতা মাওলানা সহল আল রাজি ব্যবসায়ী ও সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য।

কওমি মাদরাসার প্রধানের পরিচয় মুহতামিম হলেও, তিনি খ্যাতি পেয়েছিলেন প্রিন্সিপাল হিসেবে। তিনি দেশের প্রাচীনতম আলিয়া গোলাপগঞ্জের ফুলবাড়ি মাদরাসায় ফাজিল পর্যন্ত পড়েছেন। কামিল দিয়েছেন সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *