নরসিংদী: নরসিংদীতে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটা থেকে জঙ্গিদের আস্তানা সন্দেহে পৃথক দুটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও পুলিশ সদর দপ্তরের আড়িপাতা শাখা (এলআইসি) যৌথভাবে ওই অভিযান চালাচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছে নরসিংদীর পুলিশ প্রশাসন।
কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘ গোয়েন্দা অনুসন্ধানের পর নরসিংদীর মাধবদী ও শেখের চর এলাকার দুটি বাড়ি জঙ্গি আস্তানা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে বাড়ি ঘিরে অবস্থান নেয় পুলিশ। দুটি বাড়ির ভেতরে কমপক্ষে পাঁচজনের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল নয়টা পর্যন্ত দুটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চলছে। কিন্তু অভিযান কোন পর্যায়ে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ। ঘটনাস্থলের ৩০০ গজের মতো দূরত্বে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শতাধিক সদস্য বাড়ির চারপাশ ঘিরে রেখেছেন।
নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভাসংলগ্ন গাংপাড় এলাকার আফজাল হাজীর বাড়ি। এটি সাততলা। পুলিশ জানিয়েছে, ভবনের সপ্তম তলার দক্ষিণ পাশের ফ্ল্যাটে জঙ্গিদের অবস্থান। আর ভগীরথপুরের শেখের চর এলাকার মাজার বাসস্ট্যান্ডের চেয়ারম্যানবাড়ি রোডের বাড়িটা পাঁচতলা। সেখানে পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গিরা অবস্থান নিয়েছে। বিল্লাল মিয়ার বাড়ি বলে পরিচিত এটি।
গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে বাড়ি দুটির সব সদস্যকে বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুটি বাড়ির গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সকালে শেখের চরের একটি বাড়িতে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটকে ঢুকতে দেখা গেছে।
ভগীরথপুরের শেখের চর এলাকার পঞ্চম তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসিন্দা বাদল দেবনাথ বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ বাড়ি ঘিরে ফেলেছে বলে জানতে পারেন। এতে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। রাত তিনটার দিকে তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে আনেন পুলিশ সদস্যরা। পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাট কিছুদিন আগে বিবাহিত পরিচয়ে এক দম্পতি ভাড়া নিয়েছেন বলে শুনেছেন।
তবে সেখানে কারা অবস্থান করছেন, এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুল মান্নান গতকাল রাতে জানান, তাঁরা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর বাইরে কিছু বলা সম্ভব নয়।