মাস কয়েক আগে ‘পঞ্চপাণ্ডব’ শিরোনামে ১৫ পর্বের সিরিজ (ধারাবাহিক প্রতিবেদন) ছাপানো হয় দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’-এ। সেরা পাঁচ ক্রিকেটার—মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহর যে কোনো রিপ্লেসমেন্ট নেই, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন কোচ, সাবেক ক্রিকেটার ও সংগঠকরা।
প্রতিবেদনগুলো দেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। প্রতিবেদনে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, পঞ্চপাণ্ডবের যে কেউ অবসর নিলে বা ইনজুরিতে পড়লে বিপদে পড়তে পারে বাংলাদেশ। শেষ তাদের সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। এক তামিম ইকবালের ইনজুরির কারণে পুরো দলই কেমন যেন ছন্ন ছাড়া হয়ে গেছে। তামিম নেই, টপ অর্ডারও আর রান পাচ্ছে না। আর এ কারণে বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ দল। সব শেষ দুই ম্যাচেই তা পরিষ্কার হয়ে গেছে। ওপেনিংয়ে নামা দুই ব্যাটসম্যান বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন।
কোনো দলের ওপেনিং জুটিতে সাধারণত সেরা দুই ব্যাটসম্যানই খেলেন।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক উল্টো। দীর্ঘদিন থেকে ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল মনের মতো কোনো সঙ্গীই পাচ্ছেন না। এ কারণে ওয়ানডে ক্রিকেটে চলতি বছরের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। তবে ওপেনিং জুটি কিছু করতে না পারলেও ওপেনার তামিম ইকবাল একপ্রান্ত আগলে রেখে ঠিকই ম্যাচের পর ম্যাচ রান করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের স্কোরকে বড় করতে সহযোগিতা করেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশ যে সিরিজ জিতেছে তা তামিমের ব্যাটে ভর করেই। তা ছাড়া চলতি বছরে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের মালিকও ড্যাসিং ওপেনার। তামিম দলে থাকার কারণে ব্যাটিংয়ের অনেক দুর্বলতা সত্ত্বেও বড় স্কোর পেয়েছে দল। কিন্তু এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে তামিম ইনজুরিতে পড়ার পরই বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের জীর্ণদশা ফুটে উঠেছে। দুই ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত দুই ম্যাচেই ব্যর্থ। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধেও তারা রান পাননি, ভারতের বিরুদ্ধে সুবিধা করতে পারেননি। এমনকি তারা দুই অঙ্কের কোটাতেও পৌঁছাতে পারেননি। দুই ওপেনার এক সঙ্গে ব্যর্থ হলে দলের অবস্থা কতটা ভয়াবহ হয় তা সংযুক্ত আরব আমিরাতে পরতে পরতে বুঝতে পাচ্ছে বাংলাদেশ। দলের এমন অবস্থায় দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান বিসিবিও যেন দিশেহারা হয়ে গেছে! সে কারণেই কিনা ভারতের বিরুদ্ধে বাজে হারের পর অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজাকে না জানিয়েই দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে উড়িয়ে নিয়ে গেছে আমিরাতে। কিন্তু ইমরুল ও সৌম্যকে একাদশে নিলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? এই দুই ওপেনার কি সমস্যার সমাধান করতে পারবেন? হঠাৎ করে আমিরাতে গিয়েই কি তারা তীব্র গরমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন? ইমরুল ও সৌম্য দল থেকে বাদ পড়েছিলেন ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার জন্য। এর মধ্যে তারা ওয়ানডে ফরম্যাটের ক্রিকেটে কি এমন পারফর্ম করলেন পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের তড়িঘড়ি করে আমিরাতে নিয়ে যাওয়া হলো।