গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে ফেলতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন : রিজভী

Slider সারাদেশ


ঢাকা: গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে ফেলতে গতকাল বুধবার ভোটারবিহীন সংসদে পাশ হলো বির্তকিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ বৃহস্পতিবার দলের নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মুখ বন্ধ করতে, গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে ফেলতে গতকাল ভোটারবিহীন সংসদে পাশ হলো বির্তকিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। সরকারের লাখ লাখ কোটি টাকার দূর্নীতি ধামাচাপা দিতেই এই কালো আইন করা হয়েছে।

রিজভী আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমে অথবা যে কোন মাধ্যমইে যাতে দূর্নীতির কোন খবর প্রকাশিত না হয়, অথবা প্রকাশ করতে না পারেন সেজন্যই এই ন্যাক্কারজনক কালো আইন তৈরী করা হলো। এই আইনে মানুষের সকল বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে, দুর্নীতি ও মানবধিকার লঙ্ঘনের মত অপরাধের বিস্তার লাভ করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এটি সংবিধান বিরোধী একটি আইন।
তিনি বলেন, এ আইনে সংবিধানের মূল চেতনা বিশেষ করে মুক্ত চিন্তা, বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে। ডিজিটিাল নিরাপত্তা আইনের কারণে দেশের মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ল। কারণ আইন শৃঙ্খলাবাহিনী এখন বিনা ওয়ারেন্টে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের অফিস ঢুকে তল্লাশির নামে তান্ডব চালাতে পারবে, কম্পিউটারসহ সকল কিছু সীজ করতে পারবে, যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। সাধারণ মানুষও এই কালো আইনের থাবা থেকে রেহাই পাবে না।

বিএনপির এ নেতা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামক এই কালো আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারা সংবিধান পরিপন্থী। এই আইন বাকশালেরই প্রেতাত্মা।
এই কালাকানুনের বিরুদ্ধে দেশবাসীসহ সকল গণমাধ্যমের কর্মী, মুক্ত চিন্তার মানুষদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১শে আগস্টের মামলায় আগামী ১০ই অক্টোবর রায় দেয়া হবে। দীর্ঘ ১৪ বছর ঝুলন্ত রাখার পর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা সুপরিকল্পিত নীলনকশারই অংশ। রায় প্রকাশের আগেই সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা বলছেন-এই রায় প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপি বিপাকে পড়বে। তার মানে সরকার জানে, কি রায় হতে যাচ্ছে অথবা সরকারই ২১শে আগস্ট মামলার রায় লিখে দিচ্ছে। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা নিয়ে ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখা হবে কি না তা নিয়ে জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, ওই সময়ে যাদের কম বয়স ছিল এখন তারা প্রাপ্ত বয়স্ক, তাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই-আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দপ্তর সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিলন স্বাক্ষরিত একটি আবেদনে ২১শে আগস্ট ২০০৪ মুক্তাঙ্গনে সভা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। পুলিশের নিকট প্রেরিত আবেদনের ভিত্তিতে ২১শে আগস্ট ২০০৪ মুক্তাঙ্গনে সভার জন্য ১৯শে আগস্ট ২০০৪ পুলিশ লিখিত অনুমতি দেয়। ২১শে আগস্ট জনসভার জন্য মুক্তাঙ্গনের আশেপাশে যথারীতি ব্যাপক পুলিশ নিয়োগ করা হয়। বেলা ১টায় সভাস্থল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে স্থানান্তরিত করা হয়। এতে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা হতবাক হয়। আকস্মিক সভাস্থল পরিবর্তনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ২০০ফিট।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পরও সরকার তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন না। বরং তাকে চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে মারার চক্রান্ত করছে। আমরা অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।

ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া,হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *