আর কোনো উপায় নেই, ক্ষমতা ছাড়তেই হবে: রিজভী

Slider বাংলার মুখোমুখি


ঢাকা: বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার পতনের মহালগ্ন উপস্থিত হয়েছে। আর কোনো উপায় নেই। সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘পরশু দিনের (রোববার) প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে দাপট থাকলেও চেহারায় ছিল অন্যমনস্কতা ও দুশ্চিন্তার ছাপ। তবে আমরা সুস্পষ্টভাবে আবার জানিয়ে রাখি, গণদাবি উপেক্ষা করলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।’

আজকের সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর পড়া লিখিত বক্তব্যের বড় অংশজুড়ে ছিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ‘ধর্মের ভিত্তিতে ভোট লুটের’ অভিযোগ।

রিজভী বলেন, দেশের ভোটারদের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে ভাগ করে ফায়দা লোটার অভিনব চক্রান্ত শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতারা। আকস্মিকভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের আওয়ামী নেতার বক্তব্য অশুভ চক্রান্তের ইঙ্গিতবাহী।

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, জাতীয় ঐক্যের নামে সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত হচ্ছে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। আবহমান বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্টকরে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে নেমে পড়েছেন ওবায়দুল কাদের সাহেবরা।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ক্ষমতার মোহে মশগুল হয়ে আওয়ামী নেতারা মনের বিকারে প্রলাপ বকতে গিয়ে এখন সাম্প্রদায়িকতাকে সামনে নিয়ে আসছেন। তাঁরা ক্ষমতায় থাকার জন্য রাষ্ট্র-সমাজের স্থিতিকে ভেঙে ফেলতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’

বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় সবচেয়ে বেশি আক্রমণ হয়েছে। তাঁর আমলেই সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও নিরাপত্তাহীন। তাদের ব্যক্তিগত, সাংগঠনিক ও ধর্মীয় সম্পত্তির ওপরও আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের লোকেরা হামলা করেছে। আওয়ামী লীগের লোকেরাই তাদের ঘরবাড়ি, জায়গা-জমি দখল করেছে, আগুন দিয়ে মন্দিরসহ তাদের উপাসনালয় জ্বালিয়ে দিয়েছে।’

আজকের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাঁদের হয়রানির অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, দেশব্যাপী আবারও নতুন করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অথবা নিজেরাই নাশকতার মতো ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দিয়ে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে চার শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সরকার আতঙ্কে ভুগছে। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, দুর্নীতি-দুঃশাসনের কাদায় আটকে পড়ে এখন বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মরণকামড় দিচ্ছে।

রিজভী বলেন, ‘পুরোনো মামলা চালু করা হয়েছে এবং নাশকতার অভিযোগ এনে দেশব্যাপী মামলা জড়ানো হয়েছে নেতা-কর্মীদের। অভিযোগের ধরন একই রকম। সুতরাং, মামলাগুলো যে পরিকল্পিত, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’

রিজভী বলেন, ‘কিছুদিন আগেও আপনার বহু ঘটনা গণমাধ্যমের সুবাদে দেখছেন বা শুনছেন যে পুলিশ ছাত্র ও যুবকদের পকেটে মাদক ঢুকিয়ে, ইয়াবা ঢুকিয়ে হয়রানি করছে বা অবৈধ কায়দায় ফায়দা নিয়েছে। ঠিক এখন একই কায়দায় ককটেল বা অন্যান্য বিস্ফোরক বস্তু দেখিয়ে বিএনপি নেতাদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বা নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *