ব্যাংকগুলো কি আলাদীনের চেরাগ পেয়েছে?

অর্থ ও বাণিজ্য

bankব্যাংক সুদের হার অতিরিক্ত হওয়ায় দেশে বিনিয়োগ কমে গেছে। অনেকে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছেন না অতিরিক্ত সুদের কারণে। তাই যে করেই হোক ব্যাংক সুদের হার কমাতেই হবে বলে সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সুদের হার কমাতে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বিদ্যমান উচ্চ ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার সুপারিশ করে কমিটি।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ড. আব্দুর রাজ্জাক।

বৈঠক শেষে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে ঋণ নিতে গেলেই ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ সুদ দিতে হয়। এভাবে চলতে পারে না।

ব্যাংকগুলো কি আলাদ্বীনের চেরাগ পেয়েছে বলেও প্রশ্ন করেন কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, একটি দুটি শাখা নিয়ে একটি ব্যাংক চালু করতে না করতেই ব্যাঙের ছাতার মতো শাখা গজিয়ে যায়। বছর শেষে দেখা যায় তাদের এত কোটি অতো কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে। এসব টাকা আসে কোথা থেকে?

তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে হবে। এ ব্যাপারে আগের মিটিংয়ে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই। তাই কমিটির সদস্য টিপু মুন্সিকে সভাপতি করে একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, মো. শওকত চৌধুরী ও ফরহাদ হোসেন। সাব কমিটিকে ৩ মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সভাপতি আরও বলেন, ইনসুরেন্স কোম্পানিগুলোতে চলে কমিশন বাণিজ্য। এর সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ম্যানেজার, ইনসুরেন্স এজেন্টরা। এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ গ্রাহক। এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা বলেছি ইনসুরেন্সের প্রিমিয়াম কমাতে হবে। এছাড়া কমিশন প্রথা তুলে দিতে হবে।

মানিলন্ডারিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মালোয়েশিয়া, দুবাই, কানাডায় কী পরিমাণ টাকা পাচার হয়েছে তার কোনো হিসাব দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্টেলিজেন্স সেল। এনিয়ে কমিটিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবছর হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী না থাকায় তীব্র হতাশা প্রকাশ করেন সভাপতি। তিনি বলেন, মন্ত্রী সময় দিয়ে বৈঠকে থাকেন না। এ ধরনের বৈঠকে তার থাকা জরুরি। কারণ মন্ত্রণালয়ের জবাবদিহিতা কমিটিতে করা হয়। এতে মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বাড়ে। জাতির কাছেও বিষয়টির গ্রহণযোগ্যতা থাকে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য নাজমুল হাসান, টিপু মুন্সি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, মো. শওকত চৌধুরী, আখতার জাহান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *