ঢাকা: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে দুর্নীতির অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) চার শীর্ষ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারির অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠিতে সই করেছেন দুদকের উপপরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান সামছুল আলম।
যাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির এমডি হাবিব উদ্দিন আহমেদ, দুই মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবুল কাশেম প্রধানিয়া ও আবু তাহের মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী এবং উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) খালেদুল ইসলাম।
একই ঘটনার অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্লাহ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শামসুল হাসান মিয়ার বক্তব্য নিয়েছে দুদক।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দুই চেয়ারম্যানের বক্তব্য গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চেয়েছে দুদক। দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান তদারক কর্মকর্তা কাজী শফিকুল আলমের নেতৃত্বে সংস্থার বিশেষ দলটি বক্তব্য নেয়। সংস্থার উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, অনুসন্ধানে গতি আনতেই পেট্রোবাংলা ও বিপিডিবির চেয়ারম্যানের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়েছে। দুই সংস্থাই যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ-সংক্রান্ত নথিপত্র সরবরাহ করে, সেই বিষয়ে উভয় চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, দুই সংস্থার চেয়ারম্যানই দুদককে সহযোগিতার কথা বলেছেন।
সকালে দুদক সচিব মো. শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে জাল জালিয়াতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রয়োজনে যে কাউকে তলব করা হবে। অনুসন্ধান প্রতিবেদনও দ্রুত সময়ের মধ্যে জমা দেবে দুদক।
আরেফিন বলেন, ‘আমরা পেট্রোবাংলাকে নির্দেশনা দিয়েছি, তারাও একটু অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে খতিয়ে আমাদেরকে রিপোর্ট করবে, এর সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছে।’
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে কাগজ-কলমে বেশি কয়লার মজুত দেখিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গতকাল সোমবার তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।