রাজশাহী: গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ হানা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন তিনি।
আজ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দেওয়া পৃথক চিঠিতে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে বিএনপি তাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিল। এবার সেই একই অভিযোগ করলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
১০ জুলাই থেকে রাজশাহীতে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে। এখন পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দেওয়া তিনটি চিঠিতে বিএনপি ১০টি অভিযোগ এনেছে। আর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছয়টি চিঠিতে ১১টি অভিযোগ করা হয়েছে। বিএনপি পুলিশের বিরুদ্ধে তাদের নেতা-কর্মীদের দমন-নিপীড়নের সুনির্দিষ্ট ঘটনা উল্লেখ করলেও আওয়ামী লীগ তা উল্লেখ করেনি।
আজ রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দেওয়া চিঠিতে খায়রুজ্জামান লিটন অভিযোগ করে বলেন, কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন ওয়ার্ডের কর্মীদের বাড়িতে পুলিশ গত শনিবার রাতে হানা দেয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এতে কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন।
জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে খায়রুজ্জামান লিটন তাঁর চিঠিতে বলেছেন, কর্মীরা দলীয় পরিচয় দিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি সাক্ষাৎ দিতে অস্বীকৃতি জানান। অন্যদিকে বিএনপি কর্মীরা গেলে তিনি সাক্ষাৎ দিচ্ছেন। এ আচরণ পক্ষপাতমূলক বলে তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা প্রশাসক এস এম আবদুল কাদের বলেন, সভা বা গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকার সময় কেউ ফিরে গেছেন কি না, তাঁর জানা নেই। আইনের ভেতর থেকে যতটুকু সম্ভব তিনি সবার জন্যই করছেন।
মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামানের এ দুটি অভিযোগ ছাড়াও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী আইনি সহায়তা উপকমিটির সদস্যসচিব মুসাব্বিরুল ইসলাম রোববার আরও পাঁচটি অভিযোগ করেছেন।
আওয়ামী লীগের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে তাঁর (জেলা প্রশাসক) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য সন্তোষজনক হওয়ায় অভিযোগটি নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।