ফাইনাল দিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের পর্দা নামছে আজ

Slider খেলা

198724_1

রাশিয়া বিশ্বকাপের পর্দা নামছে আজ। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’র সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচে আজ মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও প্রথমবারের মত ফাইনালে ওঠা ক্রোয়েশিয়া।

এক মাসের যুদ্ধ ও ৬৩ ম্যাচে লড়াই শেষে বিশ্বকাপ এখন আকর্ষণের শীর্ষে। ফাইনাল ম্যাচ। এই ম্যাচটির জন্য গেল এক মাস অধীর আগ্রহে ছিল ফুটবলপ্রেমীরা। আশা ও দুরাশার দোলাচলে আজ ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়ার ফাইনাল দেখবে পুরো বিশ্ব। কারো পছন্দের দল রয়েছে ফাইনালে, কারো নেই। তারপরও তারুণ্য-নির্ভর ফ্রান্স লড়বে প্রথমবারের মত ফাইনালের জগতে প্রবেশ করা ক্রোয়েশিয়ার।

এক মাস আগে স্বাগতিক রাশিয়া-সৌদি আরবের ম্যাচ নিয়ে যতটা উত্তেজনা ছিল, শেষ মুর্হতেও সেই একই উত্তেজনা বিরাজ করছে। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি, পর্তুগালের দলপতি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও ব্রাজিলের দলনেতা নেইমার অথবা জার্মানি-স্পেনের মত বাঘা-বাঘা দল না থাকারও পর ফাইনাল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে।

তাই এখন প্রশ্ন দুটি, বিশ্বকাপ কি পুরনো স্বাদ পাবে না-কি নতুন কোন দেশকে আলোকিত করে তুলবে। ১৯৯৮ সালে প্রথম ও শেষবারের মত বিশ্বকাপ জয় করে ফ্রান্স। আর এবারই প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠলো ৪৪ লাখ লোকসংখ্যার দেশ ক্রোয়েশিয়া।

বয়স বিবেচনায় এবারের আসরে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ট দল ফ্রান্স। দ্রুতগতির এমবাপে-গ্রিজম্যানের সাথে লড়াই হবে শিরোপা জন্য মরিয়া হয়ে উঠা লুকা মড্রিচ-ইভান রাকিটিচরা। এবারের আসরের সেরা মিডফিল্ডার হিসেবে ধরা হচ্ছে মড্রিচকে।

তারপরও এবারের আসর ল্যাটিন আমেরিকার সমর্থকদের কাছে বর্ণাঢ্য আয়োজনের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে দুটি ইউরোপিয়ান দলের সেরা শক্তির প্রদর্শন দেখবে ফুটবল বিশ্ব।

স্বাভাবিকভাবে বিশ্বকাপের ফাইনালকে স্বপ্নের ম্যাচ বলছেন ফ্রান্সের মিডফিল্ডার ব্লাইস মাতুইদি।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের ফাইনাল, শৈশবের একটি স্বপ্ন সত্য হতে চলেছে। আমরা শিরোপার খুব কাছে, আমরা সেটি স্পর্শ চাই। এটিই আমাদের জীবনের খেলা।’

২০০৬ সালের ফাইনালে ইতালির কাছে ট্রাইব্রেকারে হারের পর শিরোপা জয়ের ক্ষুধা বেড়ে যায় ফ্রান্সের। সেটি আরো বড় আকার ধারণ করে ২০১৬ ইউরোর ফাইনাল শেষে। সেখানে পর্তুগালের কাছে ১-০ গোলে হারে ফরাসিরা। ওই হার থেকেই দল শিক্ষা নেয় বলে জানান মাতুইদি। তিনি বলেন, ‘ওই হার থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি এবং এর মানে আমরা বুঝতে পারি কিভাবে ফাইনাল খেলতে হয়।’

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোর টিকিট পায় ফ্রান্স। শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টারফাইনাল নিশ্চিত করে ফরাসিরা। এরপর শেষ আটে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারায় তারা। এরপর সেমিফাইনালে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে তৃতীয়বারের মত ফাইনালে উঠে ফ্রান্স।

ফ্রান্স যতটা না সহজে ফাইনালের টিকিট পায়, তার চেয়ে বেশি ঘাম ঝড়িয়ে ফাইনালে উঠতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে। গ্রুপ পর্বের বাঁধা টপকাতে কোন কষ্টই করতে হয়নি তাদের। সেখানে আর্জেন্টিনা, আইসল্যান্ড ও নাইজেরিয়াকে বিধ্বস্ত করে ক্রোয়েশিয়া।

তবে নক-আউট পর্বে ঘাম ঝড়ালেও দুর্দান্ত সব জয়ের স্বাদ নেয় ক্রোয়েশিয়া। শেষ ষোলো, কোয়ার্টারফাইনাল ও সেমিফাইনালে ১২০ মিনিটই লড়াই করতে হয়েছে তাদের। ডেনমার্ক ও রাশিয়ার সাথে টাইব্রেকারে জিতলেও, ইংল্যান্ডকে ১২০ মিনিটের মধ্যে হারিয়ে দেয় মড্রিচ-রাকিটিচরা। তাই নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারেরমত ফাইনালে উঠে ক্রোয়েশিয়া।

দলের কোচ জালাটকা ডেলিচ বলেন, ‘এটি জীবনের সবচেয়ে সেরা সুযোগ। এটি আমাদের জন্য কঠিন হয়েছে কিন্তু আমি নিশ্চিত, আমরা শক্তি ও প্রেরণা খুঁজে পাবো। আমরা কঠিন পথে ছিলাম। সম্ভব আমরাই বিশ্বকাপে একমাত্র দল চূড়ান্ত পর্যায়ে আসতে আমাদের আটটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে, যদি সব মিনিট একত্রিত করা হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *