সাতক্ষীরায় হত্যা মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ পরিবারের

Slider গ্রাম বাংলা

210855_bangladesh_pratidin_presscon_photdtt

সাতক্ষীরায় কলেজছাত্র ইমন হত্যা মামলার বাদিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য। এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা জানিয়েছেন, মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

এতে প্রকৃত খুনিরা রক্ষা পেয়ে যাবে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন তারা।
আজ রবিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইমন হত্যা মামলার বাদি শেখ আলমগীর হাসান আলমের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা লাকি বলেন, ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রাতে শহরের সুলতানপুর গ্রামের শেখ ইকবাল হাসান লিটনের ছেলে খুলনা কমার্স কলেজের ছাত্র শেখ হাসিবুল হাসান ইমনকে কে বা কারা মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন ধুলিহরের মাটিয়াডাঙ্গার আমতলা ঘের এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

তানিয়া সুলতানা লাকি বলেন ইমন হত্যা মামলাটি সম্প্রতি থানা পুলিশের কাছ থেকে সিআইডিতে ন্যস্ত করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন গত ২৬ জুন সাতক্ষীরার সিআইডি মামলার বাদি নিহত ইমনের চাচা শেখ আলমগীর হাসান আলমকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। তানিয়া জানান ‘একটি কুচক্রীমহলের প্ররোচনায় সিআইডি তাকে গ্রেফতার করায় ন্যায় বিচার নিয়ে আমরা সন্দিহান হয়ে পড়েছি’। প্রকৃত খুনিদের রক্ষার জন্য মহল বিশেষ এই ষড়যন্ত্রে নেমেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ‘ইমন হত্যা মামলার বাদি হওয়াই কি আলমের কাল হলো’ এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন হত্যাকান্ডের পর ইমনের বাবা শেখ ইকবাল হাসান লিটন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেন ‘মামলা করার জন্য পারিবারিকভাবে ছোট ভাই আলমের ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলাম’।

আলমকে গ্রেফতারের পর গত ২৭ জুন আদালতে এক এফিডেভিট করে লিটন আরও জানান ‘ আমার ভাই আলম মামলার বাদি।

তিনি বা আমাদের পরিবারের কেউই ইমন হত্যায় সন্দেহের তালিকায় নেই। তাকে উক্ত মামলা থেকে অব্যাহতি দিলে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না’। লাকি আরও বলেন আলমের সাথে ইমনের কোনো পারিবারিক শত্রুতা ছিল না । ফলে তাকে হত্যা করার প্রশ্নই ওঠে না। অথচ একটি মহল শহরের দেয়ালে দেয়ালে পোস্টারিং করে আরেক ষড়যন্ত্রে নেমেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রাতে হত্যার পর পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে যে হত্যার ঘটনার রাতে ইমনের খোঁজ নিতে তার মার কাছে আসেন তিন যুবক। রাতভর তারা বারবার ইমনের খোঁজ নেওয়ার পরও পরদিন ভোরে তাদের বাড়িতে এসে ইমন কোথায় বলে আবারও খোঁজ নেয়। কললিস্ট চেক করে পুলিশ ওই তিন যুবক শেখ বখতিয়ার হাসান বিপ্লব, শেখ মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ও রেজাউল ইসলাম মোল্লা ওরফে রনিকে গ্রেফতার করে। তিনি জানান ওই তিন যুবকের সাথে ইমনের কাঁচামালের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও লেনদেন ছিল। এর কিছুদিন পর সুলতানপুরের কাজী সাইফুল নামের আরও এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে তানিয়া সুলতানা লাকি বলেন হত্যার পর থেকে বাড়ির সবাই দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিশেষ করে ইমনের বাবা শেখ ইকবাল হাসান লিটন ও তার মা হোসনে আরা পাগলপ্রায় হয়ে ওঠেন। এ সময় ইমনের বাবা মা ও পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার চাচা শেখ আলমগীর হাসান আলম পরদিন সাতক্ষীরা থানায় ইমন হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তিনি কাউকে আসামি হিসাবে চিহ্নিত করতে পারেননি। অথচ সেই মামলার বাদিকে গ্রেফতার করে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইমন পরিবারের সদস্য আটক আলমের ভাই শেখ জাহাঙ্গির হাসান, তার স্ত্রী মালেকা বেগম, বোন সেলিনা বেগম, জেসমিন আরা পারভিন, নাজনীন বেগম, দীপ্তি প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *