শেকৃবি উপাচার্য ও শিক্ষকদের মধ্যে বিতণ্ডা

শিক্ষা

S_B_K_B_sm_368905283রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্য প্রফেসর শাদাত উল্লার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে দুর্নীতির ইস্যু নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে এ বিতণ্ডা হয়।
বাগবিতণ্ডার অডিও রেকর্ড শুনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম তার সহকর্মী অধ্যাপক অসিম কুমার ভদ্রকে লাঞ্ছনা করেন। এ ঘটনার
৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কাজের শেষ অবস্থা জানতে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা। তারপরই উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার এই ঘটনা ঘটে।

উপাচার্যের কথায় নানা অনিয়মের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থাকায় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

অডিও রেকর্ড থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আব্দুল রাজ্জাক একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে এড়িয়ে কেন জুনিয়র শিক্ষককে বাসাবাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হলো তার কারণ জানতে চান উপাচার্য প্রফেসর শাদাত উল্লার কাছে।

এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘আমি এই রকমই করব, যতদিন আমি এই চেয়ারে আছি, আমার ইচ্ছামতো লোককে বরাদ্দ দিব।’
সেখানে থাকা ড. ঈসমাইল হোসেন উপাচার্যের কথার প্রতিবাদ করে বলেন, সবকিছু একটা সিষ্টেমে চলতে হবে।
এ সময় উপাচার্য শিক্ষকদের সমালোচনা করে বলেন, আপনারা যখন খুশি তখন মাসল দেখাতে আসবেন না, আমারও আছে।

জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা উপাচার্যকে অভিযোগ করে বলেন, আপনি শিক্ষক সমিতিসহ নীল দলের সবকিছু নষ্ট করে দিয়েছেন। আপনি একাডেমিক কাউন্সিল এড়িয়ে (ইগনোর) চলছেন।

এ সময় অধ্যাপক ড. আব্দুল রাজ্জাক উপাচার্যকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার শিক্ষকতার মেয়াদ শেষ। আপনি কন্ট্রাকে আছেন। অন্য কোনো ভিসি আপনার মতো দুর্নীতি করেনি।

প্রধানমন্ত্রী উপাচার্যকে নিজের মনমতো নিয়ম বানানোর এখতিয়ার দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে উপাচার্য শিক্ষকদের সরাসরি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে এই
নিয়মই করতে দিয়েছেন।

উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের সহায়তায় এই পদে বসিনি। আপনারা যা খুশি তাই করেন।’
অডিওতে অধ্যাপক ড. আব্দুল রাজ্জ‍াককে বলতে শোনা যায়, আপনি আমাদের সাহায্য নিয়েই এ পদে বসেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, উপাচার্য যা করবে তাই আইন হতে পারে না।
অবশ্যই সবকিছু সংবিধান মতো হতে হবে। কারও ব্যক্তিগত নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। উপাচার্য জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সঙ্গে যে ব্যবহার করছেন তাতে তারা মর্মাহত বলেও জানান প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান খান ।

বাগবিতণ্ডার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মো. শাদাত উল্লা বলেন, আমি এখন কথা বলতে পারব না, আপনি আমার অফিসে আসেন।

অভিযোগ রয়েছে, আবাসিক হলে আসন বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ১৯ নভেম্বর বুধবার রাতে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. অসীম কুমার ভদ্রের সঙ্গে শারমিন চৌধুরী শৈলীর বাগবিতণ্ডা হয়।

পরে শৈলীর স্বামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামের হাতে ড. অসীম কুমার ভদ্র লাঞ্ছিত হন। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মাঝে বিভক্তি তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *