গায়ের রঙ কালো বলায় খাবারে বিষ!

Slider বিচিত্র

0-6

মহিলার গায়ের রঙ কিছুটা কালো। আর এটা নিয়ে কেউ খোঁটা দিলে তিনি বিরক্ত হতেন। তাঁর রান্নাবান্না নিয়ে যদি কেউ উপহাস করেন তাতেও তিনি প্রচণ্ড বিরক্ত হতেন। এইভাবে দিনের পর দিন ধরে আত্মীয়দের কাছ থেকে উপহাস এবং কুটুক্তির শিকার হন তিনি। এক সময় ঠিক করেন, এর প্রতিশোধ নেবেন।

২৮ বছর বয়সী ভদ্রমহিলা ভারতের মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় এক আত্মীয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়ে খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন। চারজন শিশুসহ ঘটনায় মারা যান মোট পাঁচজন। এছাড়া, আরও বাকি ১২০ জন অতিথি ওই খাবার খেয়ে ভয়াবহ অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রজ্ঞা সুরভাসে নামের ওই গৃহবধূ তাঁর এক আত্মীয় সুভাষ মানের মাহাড় গ্রামের বাড়ির এক অনুষ্ঠানে গিয়ে খাবারে কীটনাশক ছড়িয়ে দেন। এমনকি শিশুরাও তাঁর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। চারজন শিশু মারা যায় ওই খাবার খেয়ে।

রাতের খাবার শেষ করার পরেই সবারই প্রবল পেটে ব্যথা এবং বমি শুরু হয়। তাঁদের সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মুম্বাই থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাহাড় গ্রামের ওই ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা জানতে পারে, একই সময় খেতে বসেছিল অসুস্থ হয়ে যাওয়া প্রত্যেকে। খাবারে কীটনাশক ছিল কি না তা জানার জন্য খাবারের নমুনা বিশ্লেষণের জন্য পাঠায় পুলিশ।

তদন্ত শুরু করার পর ওই আত্মীয়ের বাড়ির কাছ থেকে কীটনাশকের সন্ধান পায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। প্রজ্ঞা সুরভাসের উত্তরগুলো শুনে সন্দেহ হয় পুলিশের। সন্দেহ হওয়ায় আরও প্রবলভাবে জেরা শুরু হলে জেরার মুখে ভেঙে পড়েন তিনি। স্বীকার করে নেন, খাবারে বিষ মিশিয়ে ছিলেন তিনিই।

প্রজ্ঞা সুরভাসেরকে যখন তার আত্বীয় তাদের অনুষ্ঠানে নিয়ন্ত্রন জানান, তখন তিনি ভাবেন একটি সুযোগ যখন পেয়েছি, এই সুযোগে প্রতিশোধ নিতে হবে। আর তিনি এই সুযোগেই খাবের কীটনাশক মিশিয়ে দেন।

এক কর্মকর্তা বলেন, ৭ বছর বয়সের চারজন শিশু, ১৩ এবং ৫৩ বছরের এক বৃদ্ধ মারা যান খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে।

অভিযুক্ত প্রজ্ঞা সুরভাসেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরূদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টার মামলা এবং অন্যান্য অপরাধের জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রজ্ঞা সুরভাসের বিয়ে হয়েছিল দু’বছর আগে। তাঁকে আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে গায়ের কালো রঙের জন্য সারাক্ষণ খোঁটা শুনতে হত। এছাড়া, তাঁর রান্না নিয়েও উপহাসের পাত্রী হতে হত যখন তখন। দীর্ঘদিনের সেই জমে থাকা ক্ষোভ থেকেই তিনি এই কাজ করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *