সামরিক উপায়ে ইয়েমেন সংকটের অবসান হবে না : ইউরোপ

Slider সারাবিশ্ব

191654_bangladesh_pratidin_uu_bdp_pic

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পরিষদ জানিয়েছে, সামরিক উপায়ে ইয়েমেন সংকটের অবসান হবে না বরং আলোচনার মাধ্যমে টেকসই শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে। ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ইয়েমেন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিত্‌সও উপস্থিত ছিলেন।

ইউরোপ ইয়েমেনে সংঘর্ষরত সব পক্ষের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই দেশটিতে মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেয়াসহ শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরো ভূমিকা রাখতে তারা প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা আরও বলেছেন, ইয়েমেনের সব পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই কেবল ওই দেশটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাজনৈতিক উপায়ে ইয়েমেন সংকট সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করলেও ইউরোপের কোনো কোনো দেশ সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। এ দেশগুলো সৌদি আরবের সঙ্গে কোটি কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র চুক্তি করায় ইউরোপ ও আন্তর্জাতিক সমাজের ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।

ব্রিটেন ও জার্মানি সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখায় ইয়েমেনে মানবিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সৌদি আরব ও আমিরাতের কাছে ব্রিটেন কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করছে আবার ইয়েমেন সংকট সমাধানে রাজনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতিও সমর্থন দিচ্ছে যা দ্বিমুখী নীতির পরিচায়ক। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে যেসব বোমা ফেলেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছে সেসব ব্রিটেনের তৈরি।

ব্রিটেন ছাড়াও ইউরোপের অন্যান্য অস্ত্র নির্মাণ কোম্পানিগুলোও অস্ত্র বিক্রি করে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। কয়েকটি আরব দেশের কাছে এসব অস্ত্র বিক্রি শুধু যে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন তাই নয় একইসঙ্গে তা নীতি-নৈতিকতারও পরিপন্থী।

কারণ সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর কাছে এসব অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধে সহায়তা করা হচ্ছে।
ফ্রান্সের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান বেনেডিক্ট জেনিরো বলেছেন, সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে এ পর্যন্ত হাজার হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে এবং ওই জোট যুদ্ধাপরাধ করেছে। তিনি বলেন, ইউরোপ যদি সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখে তাহলে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধে ইউরোপও শরীক হবে।

জাতিসংঘ এবং ইয়েমেন সংকট নিরসনে যুক্ত প্রতিনিধিরা বহুবার বলেছেন, সামরিক নয় বরং সংলাপ ও রাজনৈতিক উপায়ে ইয়েমেন সংকটের অবসান ঘটবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও জোটের অনুরোধ উপেক্ষা করে ইউরোপের কয়েকটি দেশ তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ ধরে রাখার জন্য সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে মূলত ইয়েমেন সংকট নিরসনে সামরিক পন্থাকেই সমর্থন দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *