মৌলভীবাজার শহর বন্যা ঝুঁকিতে, সতর্ক করে মাইকিং

Slider সারাদেশ

161452Moulvibazar_pic-1-15.06_.2018_

মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অব্যাহত ভাবে নদ-নদীতে পানি বাড়ায় মৌলভীবাজার জেলা শহর এখন বন্যা ঝুঁকিতে। পৌরসভা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরবাসীকে সতর্ক করে মাইকিং করা হচ্ছে। মনু নদে পানি আরো ৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলে শহরের বন্যা প্রতিরোধ দেওয়াল উপচে শহরে পানি প্রবেশ করবে। তাছাড়া শহর প্রতিরক্ষ বাঁধ কিংবা দেওয়াল ভেঙ্গে গেলে পুরো শহর ৭ থেকে ৮ ফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শহরের মনু নদ তীরবর্তী এম সাইফুর রহমান (সেন্ট্রাল রোড) সড়কের প্রতিরক্ষা দেওয়ালের বিভিন্ন ছিদ্র ও দেওয়ালের সংযোগের ফাঁক দিয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে শহরে পানি ঢুকছে। এম সাইফুর রহমান সড়কের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পৌরসভা সম্মিলিত সভা করে ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, মনু ও ধলাই নদের পানি কুশিয়ারা নদীতে গিয়ে পড়ে। কিন্তু কুশিয়ারার পানি উল্টা উজানের দিকে ঠেলছে। কারণ কুশিয়ার পানি মেঘনা নদীতে গিয়ে পড়ে। জোয়ারের কারণে মেঘনার পানি বেড়ে যাওয়ায় কুশিয়ার নদীর পানি কাটতে পারছে। অপর দিকে মনু ও ধলাই নদের উজানে হচ্ছে ভারতের ত্রিপুরা। সেখানে খবর নিয়ে জানাগেছে ত্রিপুরাতে অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বৃষ্টিপাতে মনু ও ধলাই নদে পানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মনু ও ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ১৫ টি ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করায় আরো নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার রাজনগর, কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ এই তিনটি উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের চারশতাধিক গ্রাম এখন বন্যা কবলিত। দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী। বন্যা কবলিত এলাকায় অব্যাহত ভাবে পানি বাড়ছে। বন্যার্ত মানুষরা আগামীকাল অথবা পরশু আসন্ন আনন্দের ঈদের কথা ভুলে এখন নিজেদের অস্থিত্ব রক্ষার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। এদিকে শহরে মাইকিং করায় পৌরসভায় বসবাসকারী নাগরিকদের মধ্যে ভীতি ও অসহায়ত্ব দেখা গেছে।

মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর মনবীর রায় মঞ্জু আজ শুক্রবার বেলা ২টায় বলেন, জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্যদের পরামর্শে আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি মাইক দিয়ে মাইকিং করে পৌরবাসীকে বন্যার আশংকার কথা জানিয়ে সকর্ত থাকার জন্য বলছি।

এদিকে বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জেলা শহরের সকল সমজিদে শুক্রবারে জুম্মার নামাজের দোয়ায় আল্লাহ্র কাছে পানাহ চাওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *