হিজড়াদের লাগামহীন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ তুরাগের মানুষ

Slider ঢাকা

download

মো: আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন : উত্তরা প্রতিনিধি : নগরীর তুরাগে চলছে হিজড়াদের লাগামহীন চাঁদাবাজি। আর চাঁদা না দিলে এলাকাবাসীকে অপমান ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। ছাড় পাচ্ছেন না নারীরাও। সঙ্গে বাবা-মা বা আত্মীয়স্বজন থাকলে তাদের কুরুচিপূর্ণ কথা আর অঙ্গভঙ্গি বেড়ে যায়। এক প্রকার জোর করেই নগরবাসীর কাছ থেকে এসব চাঁদা আদায় করছে হিজড়ারা।

বাউনিয়া বটতলা, তুরাগের রানাভোলা, ফুলবাড়িয়া, সিরাজ মার্কেট, ধরঙ্গার টেক, নয়ানগর, চণ্ডলভোগ, দিয়াবাড়ি, নলভোগ, পাকুড়িয়া, আহালিয়া, দলিপাড়া, বাউনিয়া, উলুদাহা, বাদালদী ও তুরাগের ফাঁড়ি এলাকাও দেখা যায় হিজড়াদের চাঁদাবাজির দৃশ্য। ১৩নং সেক্টরের দিয়াবাড়ি মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও সিগন্যাল পয়েন্টেও তারা বেপরোয়া। রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা কিংবা প্রাইভেটকার থামিয়ে আদায় করা হচ্ছে চাঁদা। আর চলন্ত বাসে উঠে যাত্রীপ্রতি টাকা উঠানো হয়। এছাড়া দিয়াবাড়িতেও রয়েছে তাদের দৌরাত্ম্য। তাদের চাঁদার পরিমাণ দশ টাকা থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত। টাকা দিতে না চাইলে নগরবাসীকে অপমান ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। কখনো কখনো শারীরিকভাবেও আঘাত করা হয়।

তুরাগের দিয়াবাড়ি ও আশুলিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় রাতের আঁধার নেমে এলেই অনেক হিজড়ার রূপ পাল্টে যায়। নিশিকন্যা সেজে খদ্দের জুটিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া, তুরাগ এলাকাকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ৪-৫টি সিন্ডিকেট হিজড়াদের নিয়ন্ত্রণ করে। আর দশটি সংগঠনের মতোই চলে এদের সাংগঠনিক কাঠামো। এসব গ্রুপের প্রধান হচ্ছে হিজড়া গুরু কচি ও আপন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিংবা টাকার ভাগ নিয়ে কখনও কখনও নিজেদের মধ্যেও সৃষ্টি হয় অন্তর্কোন্দল। এসব কোন্দলে বেশকিছু গ্রুপের হিজড়া খুনও হয়েছেন। যদিও এসব অভিযোগ স্বীকার করতে নারাজ হিজড়া গুরুরা।

হিজড়া গুরু কচি গ্রাম বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার দলের ৩৩ জন সদস্য রয়েছে। আমি একা ঘরেই বসে থাকি। তাছাড়া ঈদ এলে সালামির জন্য একটু এদিকে সেদিকে যাবেই। আমাকে সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেই সীমানা নিয়ে আমি কাজ করে থাকি। তবে, আমার দলে সদস্যরা রাতের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত না। তিনি আরও বলেন, আমার কাছে এমন কিছু প্রমাণ আছে যা বললে আমাকে আমার অন্য গ্র“পের হিজড়ারা মেরে ফেলবে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হিজড়া গুরু আপন হিজড়া গ্রাম বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কে বলেন, আমার দলে বর্তমানে ২৫ সদস্য রয়েছে। আমরা আগের মতো এখন আর রাস্তায় যাই না। চাঁদাও উঠাই না। এখন আমরা গার্মেন্ট দিয়েছি। ঈদকে কেন্দ্র করে আমরা পাঞ্জাবি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছি। লোকলজ্জার ভয়ে আর প্রশাসনের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন না অনেকেই। অনেকেই মনে করেন, প্রশাসনও এদের কাছে জিম্মি।

এ বিষয়ে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নুরুল মোত্তাকিন গ্রাম বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘তুরাগ এলাকায় হিজড়াদের বিষয়ে এ পর্যন্ত থানায় তেমন কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে, অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *