যৌন কেলেঙ্কারির জেরে এ বছরের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার স্থগিত করেছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি। অ্যাকাডেমির এক কর্মকর্তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগে নোবেল কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠাটি।
উল্লেখ্য, ছয় ক্যাটাগরির নোবেল পুরস্কারের মধ্যে ৫টি পুরস্কার নরওয়েজিয়ান অ্যাকাডেমি থেকে দেওয়া হলেও সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করে সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
অবশ্য এ বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারটি বাতিল করা হয়নি। অ্যাকাডেমি ২০১৮ সালের পুরস্কার ২০১৯ সালের পুরস্কারের সাথে ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে। তবে অন্যান্য বিষয়ের পুরস্কার যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।
১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার চালু হওয়ার পর থেকে এটাই সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি।
জনমনে আস্থার সংকটের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাকাডেমি। তবে অ্যাকাডেমির কয়েকজন সদস্য ঐতিহ্য রক্ষার্থে পুরস্কার দেয়ার পক্ষে মত দেন। তবে অন্য সদস্যরা মনে করেন যে অ্যাকাডেমি পুরস্কার দেয়ার মত অবস্থায় নেই।
প্রসঙ্গত দুই বিশ্বযুদ্ধের কারণে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়নি। আর ১৯৩৫ সালে পুরস্কার দেয়ার মত যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায় নি। এছাড়া প্রতি বছরই দেয়া হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন এই পুরস্কার।
সমস্যার শুরু যেভাবে
সুইডিশ অ্যাকাডেমির তহবিলে পরিচালিত সাংস্কৃতিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ফরাসি আলোকচিত্রী জঁ-ক্লদ আরনল্টের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল গত বছর শেষের দিকে। আরনল্ট হলেন সুইডিশ অ্যাকাডেমির সদস্য ক্যাটারিনা ফ্রস্টেনসনের স্বামী।
গত নভেম্বরে আরনল্টের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন ১৮ নারী। এরপর আরনল্টের স্ত্রী ফ্রস্টেনসনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি ওঠে। তবে ফ্রস্টেনসনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিপক্ষে ভোট দেয় অ্যাকাডেমি।
এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি থেকে তিন সদস্য ক্লাস অস্টেরগ্রেন, কোজেল ইসেপমার্ক এবং পিটার ইংলুন্ড সরে দাঁড়ান। এরপর এপ্রিলে পদত্যাগ করেন ফ্রস্টেনসন। আর তার কিছুক্ষণ পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন অ্যাকাডেমি প্রধান দানিয়ুস।