নৌকায় ভোট দিন, আমরা উন্নয়ন দেবো

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

110066_m-1

 

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশে উন্নয়ন হচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। গতকাল বিকালে চট্টগ্রামের পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন। বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে জনসভাস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন তিনি।

এরমধ্যে ১১টি দপ্তরের অধীনে ২৮টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ছয়টি দপ্তরের ১৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নৌকার আদলে বিশাল মঞ্চ নির্মাণ করা হয়।
জনসভায় দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, আপনারা নৌকায় ভোট দিন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন দিতে পারবো। তিনি বলেন, আপনাদের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। যেভাবে আমার পিতা আপনাদের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়েও আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে আপনাদের সুন্দর জীবন দেবো। তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই। আমি আপনাদের কাছে আশীর্বাদ চাই। আমার রাজনীতি জনগণের কল্যাণের জন্য। আমার রাজনীতি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। যদি নৌকা মার্কায় ভোট পাই, আমরা যদি আগামীতে ক্ষমতায় আসি তাহলে আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকবে। আজকে আমরা দেশের উন্নতি করছি কাদের স্বার্থে? আপনাদের স্বার্থে। একমাত্র নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের উন্নতি হবে। কাজেই আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই- আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আগামীতে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করবেন কি না। আমাকে হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় জনসভায় উপস্থিত সকলেই হাত তুলে ওয়াদা করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আপনাদের কাছ থেকে সব সময় সহযোগিতা পেয়েছি। স্বজন হারানো বেদনা নিয়ে যখন এসেছি আপনাদের মাঝেই পেয়েছি বাবার স্নেহ, হারানো মায়ের স্নেহ, হারানো ভাইয়ের স্নেহ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এই দেশ জাতির পিতা স্বাধীন করে গেছেন। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। বিশ্ব সভায় আজকে আমরা মাথাউঁচু করে চলতে পারি। কারও কাছে হাত পেতে নয়। কেউ মিথ্যা অপবাদ দিতে পারবে না। আপনারা জানেন, পদ্মা সেতু নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলো ওয়ার্ল্ড ব্যাংক। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। এবং বলেছিলাম, নিজের অর্থে আমরা পদ্মা সেতু করবো। যে কথা বলেছিলাম সে কথা রেখেছি। আজকে নিজের অর্থায়নে আমরা করে যাচ্ছি। কাজেই আমরা দেশকে উন্নয়ন করতে চাই। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন,আমি আমার বাবা-মা হারিয়েছি। ভাইদের হারিয়েছি। আমার ছোট বোন রেহানা আর আমি বিদেশে ছিলাম। আর বিদেশে ছিলাম বলেই আমরা বেঁচে গিয়েছি। একজন আপনজনও যদি আপনারা হারান সেই কষ্ট কি সইতে পারেন? পারেন না। আর একইদিনে আমি মা-বাবা, আমার তিনটা ভাই, ছোট্র রাসেল, একমাত্র চাচা, মেজো ফুপু, সেজো ফুপু, ছোট ফুপু প্রত্যেকের বাড়ি আক্রমণ করে প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে। ছয়টা বছর দেশে ফিরতে পারিনি। বিদেশের মাটিতে থাকতে হয়েছে। আসতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। দেশে আসতে বাধা দিয়েছে। ৮১ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করেছে। তখন আমি জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশে ফিরেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একটাই কাজ, একটাই চিন্তা, এই দেশ আমার পিতা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। এদেশের মানুষের জন্য বুকের রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা। বুকের রক্ত দিয়েছেন আমার বাবা, আমার ভাইয়েরা। আমি চাই, এই স্বাধীন বাংলাদেশ উন্নত হবে। প্রতিটি মানুষ পেট ভরে ভাত খাবে। প্রতিটি মানুষের বাসস্থান হবে। প্রতিটি মানুষ চিকিৎসা পাবে। প্রতিটি মানুষ শিক্ষা পাবে। প্রতিটি মানুষ উন্নত জীবন পাবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কাজ করি। আমার জীবনে কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার একটাই লক্ষ্য-আমার বাংলার মানুষ একেবারে শহর থেকে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত যে মানুষগুলো বসবাস করে তারা সুন্দর জীবন পাবে, উন্নত জীবন পাবে। সুন্দরভাবে বাঁচবে সেটাই আমার লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা ব্যবস্থা রাখতেই হবে। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তাদের বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করেছি। এ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কারণেই স্বাধীনতা পেয়েছি। এ কথা ভুললে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজই তাদের (মুক্তিযোদ্ধা) আমাদের সম্মান দিতেই হবে। তাদের ছেলে, মেয়ে, নাতি, পুতি পর্যন্ত যেন চাকরি পায়, তার জন্য কোটার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আর যদি কোটায় না পায়, তাহলে ইউনিভার্সিটির যারা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী তাদের দেয়া যাবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমাদের এ বিশেষ ব্যবস্থা করতেই হবে। তিনি বলেন, তাদের (মুক্তিযোদ্ধা) আত্মত্যাগের কারণেই তো আজকের চাকরির সুযোগ। আজকের স্বাধীনতা, আজকের মানুষের উন্নয়ন। যদি দেশ স্বাধীন না হতো তাহলে কোনো উন্নয়নও হতো না, কারও চাকরি হতো না। কেউ কোনো উচ্চপদে যেতে পারতো না। এ কথা আমাদের ভুললে চলবে না। আমরা চাই, দেশ এগিয়ে যাক। চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ২৮টি প্রকল্প উদ্বোধন করে গেলাম। আরও কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে। আরো কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এই উন্নয়নগুলো আপনাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগবে। কক্সবাজার পর্যন্ত চার লেন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে আমরা উড়াল সেতু করে দিচ্ছি। কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু করে দিচ্ছি। বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে বলেন, আমরা উন্নয়ন করি। আর বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে দেশকে পিছিয়ে দেয়। বিগত নির্বাচন ঠেকানোর নামে খালেদা জিয়ার নির্দেশে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। খালেদা ও তার দুই ছেলে কালো টাকা সাদা বানিয়েছে। তাদের পাচারের টাকা বিদেশে ধরা পড়েছে। তিনি বলেন, কোরআন শরীফে লেখা রয়েছে, এতিমের হক মেরো না। সেই নির্দেশ না মেনে এতিমের টাকা না দিয়ে সব টাকা মেরে দিয়েছে খালেদা জিয়া। এই মামলা দিয়েছে কারা? এটা দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কোর্ট রায় দিয়েছে। কোর্টের রায়ও তারা মানে না। তারা আইন মানবে না কানুন মানবে না। জনগণের টাকা মেরে খাবে।
সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ হোসেন ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বক্তব্য রাখেন। জনসভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আবদুছ ছালাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন প্রমুখ। এর আগে সকাল থেকেই আশপাশের উপজেলা থেকে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে জনসভায় আসতে শুরু করে স্থানীয় নেতাকর্মীরা। শেখ হাসিনার আগমনী বার্তায় রাজপথ ভরে ওঠে। নেতাকর্মীদের মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা। তীব্র রোদ উপেক্ষা করে বিদ্যালয় মাঠে অবস্থান নেন জনসভায় যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীরা। দুপুর ১২টার মধ্যেই জনসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। প্রায় ১৭ বছর পর চট্টগ্রামের পটিয়ায় আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার এটাই প্রথম পটিয়া সফর। প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে পটিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩২ ফুট প্রস্থের নৌকা আকৃতির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের উৎসবে পিছিয়ে ছিলেন না আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও। সড়কের মোড়ে মোড়ে এমপি হিসেবে দেখতে চাই লেখা তোরণ ও বিলবোর্ডও ছিলো চোখে পড়ার মতো। এদিকে কড়া নিরাপত্তায় পটিয়ার জনসভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পটিয়ার হেলিপ্যাড থেকে সমাবেশস্থল পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কজুড়ে ছিলো চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী। হেলিকপ্টারযোগে সমাবেশস্থলে যোগ দিলেও সড়কপথে প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা রাখা ছিলো। নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটি থেকে কাস্টমস বন্দর ভবন কোতোয়ালি ফিরিঙ্গীবাজার-নতুনব্রিজ-মইজ্জ্যার টেক হয়ে পটিয়া পর্যন্ত সড়কপথেও ছিলো কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হেলিপ্যাড থেকে সমাবেশস্থল পর্যন্ত মোতায়েন ছিলো নয় হাজার পুলিশ সদস্য। একই সঙ্গে লাগানো হয় ৫০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। পটিয়ার কচুয়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়ায় তৈরি করা অস্থায়ী হেলিপ্যাডে অবতরণের পর দেড় কিলোমিটার সড়কপথ পেরিয়ে সমাবেশস্থলে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সড়কের দুই পাশে পাঁচশ’ পুলিশের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকে। সমাবেশস্থলে প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে প্রথম স্তরে এসএসএফ, দ্বিতীয় স্তরে পিজিআর, তৃতীয় স্তরে পুলিশ ও চতুর্থ স্তরে সাদাপোশাকের পুলিশ মোতায়েন ছিলো। আশেপাশের ভবনগুলোতেও রাখা হয় পুলিশি প্রহরা। ঢাকা থেকে আনা ৫০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) লাগানো হয় সমাবেশস্থলে। পটিয়া কলেজের লাইব্রেরিতে বসে সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করা হয়। গেটে বসানো হয় আর্চওয়ে ও আর্চওয়ে মেটাল ডিটেকটর।
বিএনএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স উদ্বোধন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল চট্টগ্রামের নৌবাহিনী একাডেমিতে বিএনএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেছেন। এটি দেশের নৌবাহিনীর জন্য প্রথম সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ একাডেমি। কর্ণফুলী নদীর মোহনা এবং বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এই একাডেমিতে নির্মিত অত্যাধুনিক বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সটি আধুনিক স্থাপত্যকলার এক অনন্য নিদর্শন। জাহাজের আদলে নির্মিত এই কমপ্লেক্সের সামনে ৪১ ফুট উঁচু ব্রোঞ্জ নির্মিত বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। ১৮ ফুট প্রতিকৃতিকে ২৩ ফুট উঁচু কালো বেদির ওপর স্থাপন করা হয়েছে। যা দেখলে মনে হবে বঙ্গবন্ধু সুদূর সমুদ্র পানে তাকিয়ে আছেন। ১৬টি ভবনের সমন্বয়ে গড়ে তোলা এই কমপ্লেক্সে একাডেমিক এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি আবাসিক সুবিধা রয়েছে। এতে ওয়ার্ডরুম, প্যারেড গ্রাউন্ড, সুইমিং পুল, বোট পুল এবং অন্যান্য সুবিধাদি রাখা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে কমপ্লেক্সটি গড়ে তুলতে এখানে সিম্যানশিপ, এন্টিসাবমেরিন, যুদ্ধাস্ত্র এবং কমিউনিকেশন মডেল রুম, চার্ট রুম, লাইব্রেরি, কম্পিউটার এবং ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, আধুনিক মিলনায়তন এবং সাত ধরনের বিভিন্ন ল্যাবরেটরি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২৯শে ডিসেম্বর এই কমপ্লেক্সটি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী এখানে নৌবাহিনীর ক্যাডেট, মিডশিপম্যান এবং নৌবাহিনী স্কুল ও কলেজের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ ডিসপ্লেও উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, নৌবাহিনীর ক্যাডেট ও মিডশিপম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌবাহিনী একাডেমিতে পৌঁছলে তাঁকে নৌবাহিনী প্রধান চিফ এডমিরাল মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহমেদ স্বাগত জানান।
সমুদ্র সম্পদকে দেশের কল্যাণে কাজে লাগানোর আহ্বান: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দক্ষতার সঙ্গে বিপুল সমুদ্র সম্পদ আহরণের মাধ্যমে কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের ফলে আমরা অর্জন করেছি প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বিশাল এক সমুদ্র এলাকা। এই বিস্তৃত সমুদ্র সম্পদকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে নৌবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের ব্লু ইকোনমি’র বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।’ গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির বানৌজা ঈসা খাঁ প্যারেড গ্রাউন্ডে বিএন ডকইয়ার্ডকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএন ডকইয়ার্ডের এ অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আজ ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করা হলো, যা নৌবাহিনীর ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জল অধ্যায় হয়ে থাকবে। বিএন ডকইয়ার্ডের এ কৃতিত্বের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। এরআগে প্রধানমন্ত্রী ডকইয়ার্ডে পৌঁছলে তাঁকে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং ডকইয়ার্ডের কমোডর সুপারিন্টেন্ডেন্ট কমোডর মনিরুল হক তাঁকে স্বাগত জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *