১৯ মার্চের চেতনার ক্রন্দন, কাংখিত কেন!

Slider বাংলার সুখবর লাইফস্টাইল

29356148_2038858763104144_8388010797682393088_n

 

 

 

 

 

 

 

 

গাজীপুর অফিস:  মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্তঝরা ১৯ মার্চ।  ৭১ সনে “ জয়দেবপুরের পথ ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর” এই শ্লোগান উঠেছিল উত্তপ্ত রাজপথে। মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাক-হানাদার বাহিনীর উপর। ১৯৭১ সনের ১৯ মার্চ গাজীপুর শহরের রেলগেটে পাকিস্তানী বাহিনীকে প্রথম আক্রমন করেছিলেন আমাদের গাজীপুরের বীরযোদ্ধারা। ওই দিন শহীদ হয়েছিলেন ৩জন। আহত হয়েছিলেন অনেকে। ওই ঘটনায় সারাদেশ তোলপাড় হয়েছিল তখন। গাজীপুরে প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের ফলে সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা পাক-হানাদার বাহিনীর উপর দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ শুরু করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গাজীপুরের প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনাযুদ্ধ বলা  হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ১৯ মার্চ প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ স্থান করে নেয়। এরপর ১৯৭১ সনে আ ক ম মোজাম্মেল হক স্বাক্ষরিত এক প্রত্যয়নপত্রে ১১ সদস্য বিশিষ্ঠ সংগ্রাম কমিটর নাম ঘোষনা করা হয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ৪৬ বছর পর এই প্রথম গাজীপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯ মার্চ পালন করা হল। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  এই সংবর্ধনায়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি ১৯ মার্চের মহানায়ক হিসেবে ভাষন দেন। স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ বক্তব্য দেন।  গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভাটি পরিচালনা করেন গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগৈর সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ।

এই অনুষ্ঠানে ১৯ মার্চের ১১ সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটির জীবিত সদস্য ও শহীদ পরিবারবর্গের সকলে উপস্থিত ছিলেন না। অভিযোগ আছে, কয়েকজন সদস্য   দাওয়াতও পাননি।  আরো  অভিযোগ রয়েছে, ১১ সদস্য বিশিষ্ঠ ১৯ মার্চের কমিটির কাউকে বক্তব্য রাখতে দেয়া হয়নি। তাদের জন্য বসার কোন নির্দিষ্ট আসনও ছিল না। মাইকে শুধুমাত্র একবার তালিকাটা বলা হয়েছে। তাদের দেয়া হয়নি কোন ক্রেষ্ট। এই নিয়ে তাদের মধ্যে ছিল ক্ষোভ ও উত্তেজনা।

এ প্রসঙ্গে ১৯ মার্চের প্রথম স্বশস্ত্র সংগ্রাম কমিটির সদস্য মরহুম শহীদুল্লাহ বাচ্চুর ছেলে শাওন বলেন, আমরা অবহেলিত ছিলাম। আমাদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হয়নি।  মরহুম হাবিবুল্লাহর স্ত্রী রোকেয়া বেগম অনুষ্ঠাস্থলে কেঁদে ফেলেন।

29389353_2038717599784927_5291833539023601664_n

 

 

 

 

 

এ প্রসঙ্গে আয়োজক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কেউ ফোন ধরেননি।

গাজীপুরের সাধারণ মানুষ মনে করেন, ১৯৭১ সনের ১৯ মার্চ প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ ছিল গাজীপুরের অহংকার।  ওই যুদ্ধের একজন কর্মী হিসেবে মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন আ ক ম মোজাম্মেল হক। তাই ১৯ মার্চের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ১৯ মার্চের সর্বদলীয় মুক্তিসংগ্রাম পরিষদের সকল সদস্য সংবর্ধিত না হয়ে থাকলে ১৯ মার্চের চেতনার ক্রন্দন হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠতে পারে। এই ধরণের অনাকাংখিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ১৯ মার্চ, জাতির কাছে যথাযোগ্য মর্যাদা হারাতে পারে বলে আশংকা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *