ইরানে হিজাব খোলার দায়ে এক নারীর জেল, রাজধানীতে বিক্ষোভ

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

108271_Ahmad-2

 

বিশ্ববাংলা:   জনসমক্ষে হিজাব খুলে উড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে বুধবার ৩৪ বছরের এক নারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় ইরানের এক আদালত। তার মুক্তির দাবিতে রাজধানী তেহরানজুড়ে বিক্ষোভ করছেন অনেক নারী। যে নারীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে গ্রেপ্তারকৃতের নাম তিনি নার্গিস হুসেইনি। তাকে এ বছরের শুরুতে তেহরানে আটক করা হয়েছিল।  এ খবর দিয়েছে ডয়েচে ভেলে।
খবরে বলা হয়, নারী বৃহ¯পতিবার নারী দিবসে গ্রেপ্তারকৃত ওই নারীকে মুক্তির দাবি জানিয়ে তেহরানের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকে।

এক আইনজীবী জানিয়েছেন, বিচার চলাকালীন আসামী তার কৃতকর্মের জন্য কোনোরকম অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। বরং বিচারককে তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেছেন যে জোর করে হিজাব পরানো উচিত নয়। তেহরানের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্বাস জাফর দোলাতাবাদী বলেছেন, ‘দেশের আইনে যা বলা আছে, তা মেনেই এ রায় দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ইরানের আইন অনুযায়ী, মহিলাদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। আইন অনুসারে, মেয়েদের মাথার চুল থেকে শুরু করে শরীরের সমস্ত অংশ ঢেকে রাখতে হবে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর বিরুদ্ধে  প্রতিবাদ শুরু করেছেন অনেকে। গত কয়েক মাস ধরে ইরানের মহিলারা প্রকাশ্যে হিজাব খুলে এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচির ছবি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

ডিসেম্বর থেকে ইরানি নারীদের এই আন্দোলন চরম রূপ ধারণ করেছে। জনসমক্ষে নারীরা তাদের হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কেউ কেউ সেটা লাঠিতে উড়িয়ে ব্যানার বানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত এরকম ৩০ জন আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়েছে। সরকারি সমীক্ষা অনুযায়ী, গত এক দশক আগে দেশটির নারীরা হিজাবের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদেরও মত বদলেছে। ইরানের বেশিরভাগ মহিলা আর হিজাবের আড়ালে থাকতে চান না। তাদের বক্তব্য, হিজাব পরা বা না-পরা একেবারেই ব্যক্তিগত পছন্দ।
আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে গত বছর। ইরানের বিখ্যাত সাংবাদিক মিসাহ আলিনেজাদ প্রথম ‘হ্যাশট্যাগ হোয়াইটওয়েডনেসডেজ’ আন্দোলন চালু করেন। নিজের হিজাব খুলে লাঠির গোড়ায় বেধে সেটি উড়িয়েছিলেন তিনি। পুরো ঘটনার ভিডিও করেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন। কয়েকদিনের মধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এখনো তিনি বন্দী রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *