উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আবার নৌকায় ভোট দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

Slider খুলনা

298631_122

 

 

 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে হলে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিতে হবে। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতাসীন হলে দুর্নীতি, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী তৈরি, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। আওয়ামী লীগই দেশের উন্নয়ন করতে পারে।

আজ শনিবার খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানে খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি আজ এখানে ৪৮টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৫২টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে দিয়েছি। এর ফলে এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নতি হবে। আমরা বন্ধ কলকারখানা খুলে দিয়েছি। আমি ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে রূপসা ব্রিজ করে দিয়েছিলাম। এবার যশোর থেকে বাগেরহাট হয়ে মংলা পর্যন্ত রেললাইন যাবে। এর নির্মাণ শুরু করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা জনগণের কল্যাণের জন্য যা যা ওয়াদা করেছিলাম তা করেছি। আমরা বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। ৬৮ লাখ মা-বোন ভাতা পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আপনাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। তাদের বই আপনাদের কিনতে হয় না। বইর দায়িত্ব আমি নিয়েছি। জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে আমি প্রায় ৩৬ কোটি বই ছেলেমেয়ের হাতে তুলে দিয়েছি। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত দুই কোটি তিন লাখ ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি দিচ্ছি।

তিনি মানুষ যাতে বিনা খরচে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে সেজন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, খুলনায় বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনসহ অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশের একজন মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে সেজন্য ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ কেউ কুঁড়েঘরে বাস করবে না। প্রতিটি পরিবার পিছু একটি করে টিনের ঘর আমরা করে দেবো।

তিনি কৃষকদের উন্নতির জন্য গৃহীত পদক্ষেপের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার গৃহীত একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কথা বলেন। সেই সাথে কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য যাতে পায় তার ব্যবস্থা করেছি বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরা সারের মূল্য বারবার কমিয়ে দেয়া, দুই কোটি কৃষককে কৃষি উপকরণ প্রদান করা এবং এক কোটি কৃষকের ব্যাংকে ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

তিনি যুবকদের বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, এখন আর বিদেশ যেতে জমি জায়গা বিক্রি করতে হবে না। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে দুই লাখ যুবকের বিনা জামানতে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, বাচ্চা স্কুলে পাঠালে এক লাখ ৩০ হাজার মা বোনকে টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের মোবাইলে টাকা চলে যাবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে মা-বোনেদের হাতে মোবাইল ফোন ছিল না। এখন সবার হাতে মোবাইল আছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির কাজ ছিল জঙ্গি, সন্ত্রাসী তৈরি আর আগুনে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা। ২০০১ সালে তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় খুলনায় হত্যাকাণ্ড শুরু করে। তারা সাংবাদিক মানিক সাহা, হুমায়ুন কবীর বালু ও হারুন, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল ইমামসহ অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করে। তিনি বলেন, এ সময় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছিল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। শিক্ষক-অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্ররা স্কুল-কলেজে যাচ্ছে কিনা, মাদকাসক্ত হচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনারা সন্তানদের খোঁজখবর নিন যাতে তার জঙ্গিবাদের সাথে জড়িয়ে না পড়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের শান্তি, উন্নতি ও কল্যাণ চাই। আমরা দশ লাখ লোকের বিদেশে এবং দেশে দেড় কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমরা চার লাখ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম তখন ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন ১৬ হাজার মেগাওয়াট আমরা উৎপাদন করেছি। ২০০১ সালে আমরা ঘরে ঘরে আলো জ্বালব।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়ন করতে চাই। বিএনপি-জামায়াত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। খালেদা জিয়া অফিসে বসে বিরানী খান আর মানুষ পুড়িয়ে হত্যার হুকুম দেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় তারা গ্রামে বিদ্যুৎকেন্দ্র পুড়িয়ে প্রকৌশলীকে হত্যা করে। সে সময় খালেদা জিয়া পাঁচ শ’ মানুষকে হত্যা এবং সাড়ে তিন হাজার মানুষকে আহত করে। এখন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি করে জেলে গেছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা: দীপু মনি ও আবদুর রহমান এমপি, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, আবু সাঈদ আল মামুন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বিজিএমইএ’র সভাপতি সালাম মুর্শিদী, শেখ হেলালউদ্দিন এমপি, এস এম কামাল হোসেন, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু ও কামরুজ্জামান জামাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *