রাজনৈতিক বিভেদের সুযোগ নিতে পারে জঙ্গিরা

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

107040_lead

 

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আবারো উগ্রপন্থি জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)। অর্থ কেলেঙ্কারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানোর বিষয়ে সংস্থাটি বলেছে, এটি ইঙ্গিত দেয় যে ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চলা রাজনৈতিক সংঘাত আবারো শুরু হতে পারে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দুর্নীতি ও অন্যান্য মামলায় বিএনপির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিএনপিকে কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে। এ বছর ৮ই ফেব্রুয়ারি এ দলের প্রধান খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে ৫ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। ফলে গণতান্ত্রিক সর্বোচ্চ প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে নির্মূল করা হয়েছে।

উৎসাহিত করা হচ্ছে জিহাদিদের বেড়ে উঠাকে। বিএনপি মাঝে মাঝেই ভয়াবহ সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। অথবা সহিংসতা করে এমন গ্রুপগুলোকে সমর্থন দিয়েছে। এতে রাজনৈতিক বিদ্বেষকে উস্কে দেয়া হচ্ছে ও গভীর হচ্ছে বিভেদ। অভিযোগ রয়েছে, জঙ্গি কার্যক্রম বন্ধের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী কৌশল নেয়ার পরিবর্তে সরকার দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম ও ঢালাওভাবে বিরোধী দলের ওপর অভিযান চালানোতে মনোনিবেশ করছে। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়, কিছুটা পরোক্ষভাবে হলেও রাজনৈতিক মেরুকরণও জঙ্গিবাদের উত্থানে ভূমিকা রেখেছে। সংস্থাটি বলেছে, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক মেরুকরণের ফলে যে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে, ইসলামপন্থি জঙ্গিরা এর সুযোগ নিতে পারে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে বিরোধীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহারও অব্যাহত রেখেছে সরকার। বুধবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার বিষয়টি জানিয়েছে তারা। এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সহিংসতা বন্ধের বিষয়টি সাময়িক হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। বাংলাদেশে এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করে নিষিদ্ধ সংগঠন জামা’আতুল মুজাহেদীন ও আনসার আল ইসলাম। এর আগে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জঙ্গিদেরকে সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পরে সৃষ্ট তীব্র রাজনৈতিক বিভেদ জঙ্গিবাদের জন্য পুনরায় দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আইসিজি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, জেএমবির একটি অংশ আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। এছাড়া আনসার আল ইসলামকে আল কায়েদার দক্ষিণ এশিয়া শাখা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ১৯৯০ সালের দিকে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের সূচনা হয়। যার নেতৃত্ব দেয় আফগান ফেরত জঙ্গিরা। এখানে জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদ জঙ্গিরা প্রথম হামলা চালায় ২০০৫ সালে। তখন একযোগে ৬৩টি জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। তৎকালীন সরকার জেএমবি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু পরে দলটি আবারো সংগঠিত হয়। পাশাপাশি আনসার আল ইসলাম নামে জেএমবির আরেকটি শাখা গড়ে ওঠে। তারা নিজেদের ইসলামিক স্টেট অব বাংলাদেশ বলে আখ্যা দেয়। এছাড়া ইরাক ও সিরিয়ায় যোদ্ধা পাঠায় তারা।
জেএমবির শত্রু তালিকা বেশ দীর্ঘ। তারা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও ইসলামী অনুশাসন মেনে চলে না এমন ব্যক্তিদের ওপর হামলা চালানোকে বৈধ মনে করে। তাদের টার্গেট করে হামলা চালায়। এদিকে পুলিশের দাবি, আহমদি মসজিদ, বৌদ্ধ, হিন্দু মন্দির ও শিয়াদের উৎসবসহ সংখ্যালঘু, ধর্মীয় স্থাপনা এবং অনুষ্ঠানে যেসব হামলা চালানো হয়েছে, তাতে এই দলটির হাত রয়েছে। যদিও আইএস এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে।
আইসিজি’র প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের ১লা ও ২রা জুলাই ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। ওই হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছিলেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন বিদেশি।

বাংলাদেশে জিহাদীদের পুনরুত্থানের পেছনে এদেশের কলহপূর্ণ জাতীয় রাজনীতির ভূমিকা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সাল পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বেশ কয়েকজনকে শাস্তি দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামীর জ্যেষ্ঠ নেতাদের টার্গেট করা হয়েছে। বিচারকার্যে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন না করা, স্বচ্ছতার অভাব, প্রভাব খাটানো, আসামিপক্ষের আইনজীবী ও সাক্ষীদের হয়রানি ইত্যাদি কারণে ওইসব নেতার শাস্তি প্রদান দেশজুড়ে সমালোচিত হয়েছে। এসবের মধ্যে আনসারুল ইসলাম তাদের পুনরুত্থানের কারণ খুঁজে পেয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের প্রসিকিউশনগুলো জামায়াতে ইসলামীকে ভেঙে দেয়া ও আওয়ামী লীগের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) কলঙ্কিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, জামায়াতে ইসলামী বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র দল। এসব বিচারপ্রক্রিয়া ইসলামপন্থিদের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মূলত ঘটেছে ব্যাপক প্রতিবাদের মাধ্যমে, জিহাদী সহিংসতার মধ্য দিয়ে নয়। তবে আনসারুল ইসলাম, এই বিচারগুলোকে ইসলামের ওপর হামলা হিসেবে দেখেছে। তারা শহুরে, শিক্ষিত যুবকদের দলে ভিড়িয়েছে। যদিও সে সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। তারা ধর্মনিরপেক্ষ অধিকারকর্মী ও ব্লগারদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্ট-ডিসেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এতে করে বাংলাদেশের নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আইএস ও পাকিস্তানি জঙ্গিসহ বিভিন্ন জিহাদী দল রোহিঙ্গাদের সংকটাপন্ন দশায় তাদের প্রতি সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে। যদিও, আপাতত এই শরণার্থীরা জিহাদী দলের সঙ্গে যোগ দেবে এমন কোনো জোরালো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই মানবিক সংকট সামলাতে বাংলাদেশের শুধু সন্ত্রাস-দমনের দিকে নজর দিলেই হবে না। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতে হবে। নিজেদের ও অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী সম্প্রদায়ের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ প্রশমিত করতে দ্বিগুণ চেষ্টা চালাতে হবে। গত কয়েক বছর ধরে জিহাদী সহিংসতার উত্থান সামলাতে রাষ্ট্র মূলত কাটখোট্টা ও বাছবিচারহীন শক্তির ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা। কিছু কৌশল বিশাল সংখ্যার জিহাদীদের সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। জঙ্গি দলগুলোকে দুর্বল করতে পেরেছে। তবে, তারা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহকে ছোট করে দেখেছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, জিহাদী গোষ্ঠীগুলোর নতুন সদস্য দলে ভেড়ানোর ক্ষমতা, তহবিল সংগ্রহ ও অভিযান চালানোর ক্ষমতা এখনো অক্ষত রয়েছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ করতে, আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে এই জঙ্গি হামলার হুমকি ব্যবহার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, তারা বড় ধরনের জঙ্গি হামলাগুলোতে জড়িত ছিল।
বিগত বছরগুলোতে হামলার সংখ্যা স্তিমিত হয়েছে কিছুটা। তবে সরকার মূলধারার রাজনৈতিক বিরোধীদের প্রান্তিকীকরণের কারণে তারা এখন জিহাদী গোষ্ঠীগুলোর ইচ্ছানুযায়ী কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনীতিকরণের কারণে, মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ রাজধানীর অভিজাত অংশের শিক্ষার্থীদের দলে ভেড়াচ্ছে এমন সংগঠনগুলোর কাজে বিঘ্ন ঘটাতে প্রয়োজনীয় তদন্ত করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ বাহিনী ও বিচার বিভাগ। আওয়ামী লীগের মধ্যে আগামী নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে আর নতুন কোনো পদক্ষেপ নেয়ার মনোভাব দেখা যাচ্ছে না। তবে জিহাদী সহিংসতা থামাতে হলে যেসব সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিতে হবে সেগুলো হচ্ছে- যে মেরুকরণের কারণে জিহাদীরা কার্যক্রম পরিচালনার পরিবেশ পাচ্ছে তা পাল্টে দিতে হবে; এই সমস্যা কিভাবে সামলানো যায় সে বিষয়ে রাজনৈতিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে; নতুন পেশাদার পুলিশ বাহিনী ও বিচার বিভাগে বিনিয়োগ করতে হবে। অবশ্যই, কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়া- বিশেষ করে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন ঘিরে যদি পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলোর মতো সহিংসতার সৃষ্টি হয়, তাহলে বাংলাদেশবাসী আরো একবার জিহাদী পুনরুত্থানের সম্মুখীন হবে। আইসিজি’র রিপোর্টে বলা হয়, ত্রুটিপূর্ণ বিচারের সঙ্গে বাংলাদেশে গভীরভাবে মেরুকরণ হয়ে আছে রাজনীতি। তার ওপর আওয়ামী ঘরানার সরকার ব্যবস্থায় জঙ্গিবাদের উত্থানে অবদান রাখছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৩ সালের মধ্যভাগে বাংলাদেশের হাই কোর্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ করে জামায়াতে ইসলামীকে। এটা কোনো রাজনৈতিক রায় না হলেও এই রায়ের ফলে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একটি মিত্রকে বাদ দেয়া হয়েছে। এর ফলে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সহিংসতায় যুক্ত হওয়ার জামায়াতে ইসলামীকে ঠেলে দেয়া হয়। এরপর নির্বাচন যত এগিয়ে আসতে থাকে বিএনপি ততই আপত্তি তুলতে থাকে। অন্যদিকে নির্বাচনকে ক্রমশ সামনে ঠেলে দিতে থাকে সরকার। অবশেষে নির্বাচনের আগের দিন বিএনপি ঘোষণা দেয়, তারা নির্বাচন বর্জন করবে। ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মনোযোগ চলে যায় বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের দিকে। ২০১৩ সালের শেষ নাগাদ কমপক্ষে ৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে জন-অসন্তোষে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হন ওই বছরে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সহিংসতায় ভোটগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে। এর ফলে বিরোধী দলবিহীন অবস্থায় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ চলে যায় ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রণে। এর এক বছর পরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী তীব্র সহিংস আন্দোলন শুরু করে ওই নির্বাচনের বার্ষিকীতে। নতুন নির্বাচনের দাবিতে এই আন্দোলনে কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে সংঘাত। এতে কমপক্ষে ১৫০ জন মানুষ নিহত অথবা নিখোঁজ হন। ভয়াবহ এসব হামলার অনেকটার জন্য দায়ী জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। মূলধারার রাজনীতি থেকে বিএনপি প্রান্তিক অবস্থানে চলে যায়- এর অনেকটার জন্য দায়ী বিএনপি। তারা নির্বাচন বর্জন করেছে। সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের দাবি সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে। যুদ্ধাপরাধ বিচারের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে টার্গেট করেছে সরকার। তাদেরকে নিষিদ্ধ করেছে। এসব কিছু মিলে রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে বড় ধরনের শূন্যতা। আইন প্রয়োগকারীদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। কিন্তু তারা আনসারুল ইসলামের উত্থান ও পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়, প্রথমদিকে আনসারুল ইসলাম ও জেএমবির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য ছিল। আনসারুল ইসলামের সদস্যরা নিজেদের ইসলামিক স্টেটের পক্ষে লড়াই করার চেয়ে পশ্চিমা ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে লড়াই করে ইসলামের রক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে থাকে। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাতকারীরাই তাদের টার্গেটের সীমাবদ্ধতায় থাকে। হামলার স্থানগুলো থেকে যেসব লিফলেট তদন্তকারীরা উদ্ধার করেছে তাতে জোরালোভাবে বোঝা যায় যে, ইসলামের প্রতি আঘাত না করলে অন্য কোনো ধর্ম বিশ্বাসীর বিরুদ্ধে তারা লড়াই করে না। পক্ষান্তরে প্রায় দু’দশক আগে প্রতিষ্ঠিত হয় জেএমবি। তারা চায় ইসলামিক আইন। আনসারুল ইসলাম টার্গেট করে শুধু বাংলাদেশি ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থি ব্লগারদের। আনসার ও জেএমপি উভয়ে প্রথমে একসঙ্গে, পরে আইসিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক অংশ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে। এসব হামলার বেশ কিছুর দায় স্বীকার করেছে আইসিস। তবে পুলিশে সন্দেহ করে, এসব হামলায় ভূমিকা ছিল জেএমবির। রিপোর্টে আরো বলা হয়, ২০১৫ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো স্থানীয় জিহাদী ও সিরিয়ায় বাংলাদেশি যোদ্ধাদের মধ্যে যোগাযোগের তথ্য উদঘাটন করে, যদিও তারা এ ক্ষেত্রে বেশি তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর পরই (সাবেক) বাংলাদেশ রাইফেলসে বিদ্রোহ দেখা দেয়। এতে ৭৪ জন নিহত হন। এর মধ্যে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা। ২০০৯ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজা আওয়ামী লীগের এমপি শেখ ফজলে নূর তাপসকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত ৫ জন ও সাবেক ৬ জন সেনা কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। ২০১২ সালে অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগে ১২ জন সেনা কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। তবে কারো বিচার করা হয়নি। বেশির ভাগকেই নানা কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *