আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার সময় অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। আওয়ামী লীগের শত শত নেতা-কর্মী জেলে। দুজন মন্ত্রী দুদকের মামলায় নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। সিরাজগঞ্জের মেয়র ও টাঙ্গাইলের এমপি কারাগারে। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, শেখ হাসিনার হাত থেকে পার পাওয়ার উপায় নেই কারও।
আজ বুধবার ধামরাইয়ের বালি এলাকায় বংশী নদীর ওপর একটি সেতু উদ্বোধনের পর এক জনসমাবেশে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সেতুটি করা হয়েছে চৌহাট-আমতাবালিয়া-মির্জাপুর সড়কের বংশী নদীর ওপরে। সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে জনসমাবেশের আয়োজন করে ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ।
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে আচরণ ভালো করবেন। যতই উন্নয়ন করুন না কেন, আচরণ ভালো না করলে উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। জনগণকে খুশি রাখতে হবে। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। ক্ষমতা চিরদিন থাকবে না। জনগণ আপনাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আপনারা জনগণের পাশে থাকবেন, তাঁদের জন্য কাজ করবেন। এমপির পিএস, এপিএস কমিশন খান, কিন্তু এমপি ভালো। আপনি যতই ভালো হন, আপনার পাশের লোক যদি খারাপ কাজ করে তার দায় এড়াতে পারবেন না।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন আর বেশি দূরে নয়। দলকে সংগঠিত করুন। এখনই সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রে এখন থেকে নির্বাচনী কমিটি করতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। কয়জন আওয়ামী লীগ করে আর কয়জন অন্য দল করে, খাতা-কলমে তা হিসাব করতে হবে। দল ভারী করার জন্য কোনো খারাপ লোককে দলে টানবেন না। দাগি, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও স্বাধীনতাবিরোধীরা যেন দলে না ঢোকে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।’
জনসমাবেশ উপলক্ষে রাস্তায় তোরণ, বিলবোর্ড বসানো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো কিছুই থাকবে না। হৃদয়ে নাম লিখতে হবে।’
নেতাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখন দুটি উদ্বেগের বিষয়। একটি, একশ্রেণির দুর্বৃত্ত প্রশ্ন ফাঁস করে চলেছে। আরেকটি হচ্ছে গ্রামে গ্রামে মাদক ছড়িয়ে যাওয়া। এরা দেশ ও জাতির শত্রু। এদের দ্রুত বিচার আদালতে বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে মামলা করেছে, তা হয়েছে ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ মামলা সাজিয়েছে। তারা বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কথা বলে। আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘরে বসে হিন্দি সিনেমা দেখে। বিএনপি ভেবেছিল, খালেদা জিয়া জেলে গেলে লাখ লাখ মানুষ প্রতিবাদ করবে, রাস্তায় নেমে আসবে। কিন্তু কেউ আসেনি। মরা গাঙে জোয়ার আসে না। এখন বিএনপি দেশের বিষয়ে বিদেশিদের ডেকে এনে নালিশ করছে।’
জনসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সংসদ এম এ মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।