ছাত্রলীগ কর্মী হত্যা: প্রধান আসামির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

Slider রাজনীতি

133b0c4fa2b41d847bbc9f5719b519a7-5a4ef9398699e

যশোর: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী মিলন হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজু সরদারের (২৮) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রোববার সকালে মণিরামপুর উপজেলার স্মরণপুর গ্রামের সরিষাখেত থেকে পুলিশ মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে।

রাজু সরদার ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে স্মরণপুর গ্রামের ইটভাটার পাশে সরিষাখেতের মধ্যে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একটি রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মণিরামপুর থানায় নিয়ে যায়। এটি রাজুর লাশ বলে শনাক্ত করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাররম হোসেন বলেন, মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সকালে সরিষাখেত থেকে রাজু সরদারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ওসি আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, রাতে সন্ত্রাসীদের দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে রাজু নিহত হয়েছেন।’

রাজু সরদারের ভাই বাবু সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজুকে কে বা কারা হত্যা করেছে, তা বলতে পারব না। সকালে তার লাশ পাওয়া গেছে।’ তিনি বলেন, ‘রাজুর সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে শনিবার সকালে। সে রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারত না। পুলিশ তাকে ধরার জন্য ওত পেতে ছিল। যে কারণে রাজু বাড়িতে থাকত না। রাতে সে কোথায় ছিল, তা আমরা জানি না।’

গত শুক্রবার রাতে ঝিকরগাছা উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. বাবু নামে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কে এই রাজু সরদার?
১৬ ডিসেম্বর ঝিকরগাছা পৌর এলাকায় মিলন হোসেন নামে ছাত্রলীগের এক কর্মী খুন হন। ওই হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি রাজু সরদার।

ঝিকরগাছা থানার ওসি আবু সালেহ মাসুদ করীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজু সরদারের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা থানায় হত্যাসহ ২৬টি মামলা রয়েছে। পুলিশের খাতায় রাজু পলাতক ছিলেন। তিনি চিহ্নিত সন্ত্রাসী।’

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝিকরগাছায় আওয়ামী লীগ মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। একাংশের নেতৃত্বে স্থানীয় সাংসদ মনিরুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের ঝিকরগাছা উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুসা মাহমুদ এবং অপর অংশের নেতৃত্বে দলের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম। রাজু দলের যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

জানতে চাইলে যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজু সরদার আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমার সঙ্গে রাজনীতি করত। বেয়াদবি করার কারণে পাঁচ মাস আগে তাকে আমি তাড়িয়ে দিয়েছি।’

১৬ ডিসেম্বর খুন হওয়া মিলন হোসেন ছিলেন সাংসদ মনিরুল ইসলামের অনুসারী। যে কারণে সাংসদ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে মিলনের লাশ নিয়ে ঝিকরগাছা পৌর শহরে মিছিল করা হয়। তখন তিনি মিলনকে হত্যার জন্য রাজু সরদারকে দায়ী করে তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছিলেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *