ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আড়াই বছরের শিশুটি মাঝেমধ্যে একটু চোখ মেলে তাকায়। নড়াচড়া করতেও পারে না। কোনো কথাও বলছে না। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলছেন, শিশুটির মস্তিষ্কে সংক্রমণ হয়েছে। তার অবস্থা সংকটজনক। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু শিশুটির কোনো দাবিদার নেই।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া একটার দিকে দারুসসালাম থানার পুলিশ লাল রঙের কম্বল দিয়ে মোড়ানো শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছে।
দারুসসালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুকুল আলম বলেন, বাস টার্মিনালের যাত্রীছাউনির নিচে লাল রঙের কম্বলে মোড়ানো অবস্থায় শিশুটি পড়ে ছিল। শিরিন নামের এক চকলেট বিক্রেতা অস্পষ্ট স্বরে কান্নার শব্দ শুনে শিশুটির কাছে যায়। আশপাশে তার কোনো স্বজন না পেয়ে তাকে নিয়ে রাত ১১টার দিকে দারুসসালাম থানায় যান। পরে পুলিশ অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। এ সময় শিশুটির শরীরে প্রচণ্ড জ্বর ছিল।
আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বিছানায় ছেলেটি প্রায় নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। সে হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক আবদুল মতিনের অধীনে চিকিৎসাধীন। কর্তব্যরত চিকিৎসক মন্টি বণিক বলেন, শিশুটির মস্তিষ্কে সংক্রমণ হয়েছে। তার শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি হচ্ছে। শিশুটিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখার দরকার হলেও এ হাসপাতালে ওই বয়সের শিশু রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই।
ওই চিকিৎসক আরও বলেন, শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন। তার চিকিৎসা ব্যয়বহুল। কিন্তু চিকিৎসা খরচ বহন করার কেউ নেই। তাই হাসপাতালের কল্যাণ তহবিল থেকে যতটুকু পারা যায় ততটুকু দিয়ে তার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। তবে চিকিৎসার খরচ বহন করতে কেউ এগিয়ে এলে শিশুটি বেঁচে যেতে পারে।