ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ব্যবহার না করায় স্থানীয় মেয়রের ওপর চড়াও হন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পরে মেয়র নিজের কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। আজ শনিবার সকালে মুক্তাগাছা পৌরসভা চত্বরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র মো. শহীদুল ইসলাম বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
মুক্তাগাছা পৌরসভা ও স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ সকালে পৌরসভার উদ্যোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শিশুদের কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানস্থলের বিজয় মঞ্চে বিজয় দিবসের একটি ব্যানার করা হলেও ওই ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছিল না। অনুষ্ঠান চলাকালে ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার না করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে মুক্তাগাছা পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হাই বর্তমান মেয়রের কাছে জানতে চান, কেন অনুষ্ঠানের ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করা হয়নি। এ নিয়ে মেয়রের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মেয়রের ওপর চড়াও হন। পরে মেয়র নিজের কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। ঘটনার সময় অনুষ্ঠানস্থলের কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনার পর মুক্তাগাছা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল হাইসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মী মুক্তাগাছা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হাই অভিযোগ করেন, ‘ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি না থাকার কারণ জানতে চাইলে শহীদুল ইসলাম বলেন যে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করা হলে জিয়াউর রহমানের ছবিও ব্যবহার করতে হবে। স্বাধীনতাযুদ্ধের তিনি ঘোষক ছিলেন।’ এ কথা বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার শামিল। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
জানতে চাইলে আবদুল হাই বলেন, ‘ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার না করার কারণ জানতে চাইলে বর্তমান মেয়র শহীদুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর করতে শুরু করেন। আমি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি।’
অভিযোগের জবাবে শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবছর মুক্তাগাছা পৌরসভার উদ্যোগে বিজয় দিবস উদ্যাপন করা হয়। কোনো বছরই ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকে না। এর আগে আওয়ামী লীগের মেয়র আবদুল হাইয়ের সময়ের ব্যানারেও বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিল না। আমি মেয়র হওয়ার পর গত দুই বছরও আগের মেয়রের সময়ের ব্যানারের অনুকরণে ব্যানার তৈরি করে (বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাড়া) বিজয় দিবস পালন করেছি। এ বছর হঠাৎ করেই বঙ্গবন্ধুর ছবি নেই—এমন অজুহাতে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে আমি নিজের কার্যালয়ে ফিরে যাই। আমি বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করিনি।’