অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরছে আগৈলঝাড়ার মাদকসেবীরা

Slider বরিশাল

index

 

 

 

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার ৩ মাদক ব্যবসায়ী ও ১১ জন মাদকসেবনকারী অন্ধকার পথ ছেড়ে আলোর পথে ফিরে সুন্দর জীবন নিয়ে বাঁচার স্বপ্নে পুলিশ প্রশাসনের আহ্বাণে সাড়া দিয়ে নতুন করে বরিশাল জেলা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। জেলার ৫৮ জন ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে পুনর্বাসিত করেছে পুলিশ।
বুধবার বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন প্রাঙ্গনে পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বিপিএম এর সভাপতিত্বে জেলার ১০টি থানার মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বিপিএম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।
এর আগে অন্ধকার পথ ছেড়ে আলোর পথে ফিরে পরিবার সদস্যদের নিয়ে সমাজে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার আগৈলঝাড়া থানাসহ ১০ থানার শতাধিক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। আত্মসমর্পনকারীদের মধ্য থেকে জেলা পুলিশের উদ্যোগে আগৈলঝাড়ার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের হুমায়ুন কবির হাওলাদারের ছেলে জুয়েল হাওলাদার, বাকাল গ্রামের মৃত নিখিল দত্তর ছেলে দুলাল দত্ত (৪৫), পয়সা গ্রামের মৃত মজিদ বেপারীর ছেলে আব্দুর রহমান বেপারী (৩০) ও সেরাল গ্রামের মৃত আ. হক মৃধার ছেলে আ. রহমান মৃধাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে পুনর্বাসনের আওতায় সেলাই মেশিন প্রদান করেন পুলিশ সুপার।
সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, পুলিশের তালিকানুযায়ী বুধবার জেলা পুলিশের কাছে আগৈলঝাড়া উপজেলার আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা হলো ফুল্লশ্রী গ্রামের রমিজ উদ্দিন ফকিরের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী সালাম ফকির, পশ্চিম পয়সা গ্রামের নতুন শেখের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী আল আমিন শেখ (২৭), চক্রিবাড়ি গ্রামের খবির হালদারের ছেলে মাদকসেবী পীযুষ হালদার, পশ্চিম বাগধা গ্রামের জলিল খানের ছেলে মাদকসেবী বজলু খান (৩৫), নগরবাড়ি গ্রামের জাহাঙ্গীর ফকিরের ছেলে মাদকসেবী সিদ্দিক ফকির, মালেক সিকদারের ছেলে মাদকসেবী লিটন সিকদার ও মৃত করিম শাহ’র ছেলে মাদকসেবী আল আমিন শেখ, ফুল্লশ্রী গ্রামের নাজেম বেপারীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারী, চেঙ্গুটিয়া গ্রামের হুমায়ুন কবির হওলাদারের ছেলে মাদকসেবী জুয়েল হাওলাদার (৩৫), বাকাল গ্রামের মৃত নিখিল দত্তের ছেলে মাদকসেবী দুলাল দত্ত (৪৫), পয়সা গ্রামের মৃত আ. মজিদ বেপারীর ছেলে মাদকসেবী আব্দুর রহমান বেপারী (৩০), পয়সা গ্রামের রহিম কাজীর ছেলে মাদকসেবী মনির কাজী (২২), আমবৌলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন ফরাজীর ছেলে মাদকসেবী সোহেল ফরাজী (৩০), সেরাল গ্রামের মৃত আ. হক মৃধার ছেলে মাদকসেবী আ. রহমান মৃধা।
এর আগে চলতি বছর ১৩ মার্চ আগৈলঝাড়া থানা চত্বরে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের আত্মসমর্পণ ও সংবর্ধনার অনুষ্টানে উপরোক্ত ৭ জন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা আত্মসমর্পণ করলেও ওই সময় তারা থানায় কোন মাদকদ্রব্য জমা না দেয়ায় আত্মসমর্পণকারীদের তালিকা নিয়ে এলাকায় বেশ হইচই পরেছিল। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে অনেকেই মামদক মামলার আসামী রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে জেলার ১০ থানার ৫৮ জন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে পুনর্বাসনে সহযোগিতা করেন পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বিপিএম। যা পর্যায়ক্রমে আরও ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের এই পুনর্বাসনের আওতায় নেয়া হবে। সমাজে মাদকের বয়াবহতা তুলে ধরে এর বিস্তার ঠেকাতে মাদক ব্যবসায়ীদের ভালো হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। সূত্র আরও জানায়, পূর্বের মাদক মামলায় জামিনে থাকলে বা অভিযোগ আছে কিন্তু মামলা নেই তারা এ সুযোগ পেলেও গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকা ব্যবসায়ীরা এ সুবিধার আওতায় আসবে না। অতীতে মাদক মামলা থাকলে তার বিচারের আওতায় থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *