সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ৪ খুনি শনাক্ত

Slider সারাদেশ

0ed644d157860ce40f5dac2114bf09c7-5a0e0680d3389

ঢাকা: জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক সিদ্দিক হোসাইন মুন্সি হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া চারজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, তাঁরা পেশাদার খুনি, ভাড়ায় এনে এঁদের দিয়ে হত্যা করানো হয়েছে। তাঁদের নাম-ঠিকানাও পেয়েছে পুলিশ।

তদন্ত-সম্পৃক্ত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সিদ্দিক হোসাইন মুন্সির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স এস মুন্সি ওভারসিজে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি) না থাকায় খুনের দৃশ্যের ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তবে ওই বাড়ির দোতলার সিঁড়িতে থাকা সিসি ক্যামেরায় খুনিদের ঢোকা ও বের হওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে।

গত মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তরা রাজধানীর বনানীর বি ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের মেসার্স এস মুন্সি ওভারসিজে ঢুকে সিদ্দিক হোসাইন মুন্সিকে পিস্তল দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। তাঁরা বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিষ্ঠানটির তিন কর্মচারী মোস্তাফিজুর রহমান (৪২), মোখলেসুর রহমান (৩৮) এবং মির্জা পারভেজ আহমেদকে (২৮) গুলি করে চলে যান।

মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিসি ক্যামেরা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিট ২৩ সেকেন্ডে মেসার্স এস ওভারসিজের প্রধান ফটক দিয়ে প্রথমে দুই যুবক ঢুকে পড়েন। তাঁদের একজনের কাউ বয় হ্যাট পরা (ক্যাপ), আরেকজনের মাস্ক ও চশমা পরা ছিল। এর ২৪ সেকেন্ড পর আরও যুবক ভেতরে ঢোকেন। তাঁদের একজনের পরনে টি-শার্ট, প্যান্ট ও আরেকজনের পরনে ফুলহাতা ফতুয়া ও ফুলপ্যান্ট রয়েছে। ৭টা ৫২ মিনিট ৪ সেকেন্ডে প্রথমে দুজন, এরপর দুজন বেরিয়ে যান। বের হওয়ার সময় এক যুবককে মুঠোফোনে কথা বলতে দেখা যায়। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হবে।

বনানী থানায় করা মামলাটি থানার পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ছায়া তদন্ত করছে। তদন্ত-সম্পৃক্ত ডিবির একজন কর্মকর্তা  বলেন, সিসি ক্যামেরা ভিডিও ফুটেজ দেখে হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া চারজনের নাম-ঠিকানা পাওয়া গেছে। তাঁরা পেশাদার খুনি। এখন তাঁদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তার করা হবে।

ডিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের ধরে আরেকটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক ভাড়াটে খুনি দিয়ে সিদ্দিক মুন্সিকে হত্যা করিয়েছেন বলে পুলিশ মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে। ওই মালিক ও সিদ্দিক মুন্সি একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। মুন্সি ওভারসিজের মাধ্যমে বেশি লোক হজে ও মধ্যপ্রাচ্যে যেতেন। এতে ওই মালিক তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। ওই ব্যবসায়ী পরিকল্পনা করেন সিদ্দিক মুন্সিকে সরিয়ে দিতে পারলে তিনি ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবেন। হত্যায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতাকে গ্রেপ্তার করা হবে। ওই মালিক যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য তাঁর ওপর পুলিশের নজরদারি আছে।

সিদ্দিক মুন্সির স্বজনদের দাবি, চাঁদা না দেওয়ায় সিদ্দিক মুন্সিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। চাঁদা না দেওয়ায় সিদ্দিক মুন্সির বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের আবদুস সালাম কয়েকটি মিথ্যা মামলা করেছেন। সালাম তাঁকে ও তাঁর সন্তানদের অপহরণেরও হুমকি দেন। এ ঘটনায় সিদ্দিক মুন্সি উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেছিলেন।

তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার এস এম মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক কোনো ঝামেলা আছে কি না, তা সামনে রেখে তদন্ত হচ্ছে। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *