বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের কিংবদন্তি অভিনেতা ছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক। সোমবার ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান এই অভিনেতা।
হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৬টা ১২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নায়করাজ।
নায়ক রাজের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। হাসপাতালে নায়ক রাজকে শেষ বারের মতো দেখতে গিয়েছেন অনেকে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শোক প্রকাশ করেছেন।
ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান নিজের শোকের কথা জানিয়েছেন। শাকিব খান ফেসুবক স্ট্যাটাসে লেখেন, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক স্যার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
নায়ক নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুর খবর শুনে ইউনাইটেড হাসপাতালে ছুটে যান চলচ্চিত্র অঙ্গনের তারকারা। অভিনেতা আলমগীর, পিযুষ বন্দোপাধ্যায়, ফেরদৌস, ওমর সানি, জায়েদ খান, সায়মন, মৌসুমীকে ইউনাইটেড হাসপাতালে দেখা যায়।
হাসপাতালে তার ছোট ছেলে চিত্র নায়ক সম্রাট বলেন, আপনার তাঁর আত্নার মাগফেরাত কামনা করে তার জন্য দোয়া করেন। দোয়া ছাড়া এখন আর কিছুই বলার নেই আল্লাহ যেন তাকে মাফ করে দেন। এসময় বর্ষীয়ান নায়ক আলমগীরের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করে গণমাধ্যম। তবে তিনি কোন কথা বলেন নি।
এদিকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সম্মানিত আজীবন সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুতে তিন দিনের শোক ঘোষণা করছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। সমিতির সাধারন সম্পাদক জায়েদ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা রাজ্জাক ‘নায়করাজ’ হিসেবে নামে সুপরিচিত। ষাটের দশকের মাঝের দিকে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন নায়করাজ রাজ্জাক। ষাটের দশকের বাকি বছরগুলোতে এবং সত্তরের দশকেও তাঁকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত।
তার পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। ডাক নাম রাজু, রাজ্জাক, রাজা। তিনি ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জের নাগতলায় জম্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম আকবর হোসেন এবং মাতার নাম নিসারুন নেস। রাজ্জাকের তিন ভাই তিন বোন তাদের মধ্যে তিনি ছোট।
তিনি সর্বপ্রথম কলকাতার শিলালিপি নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসাকে (লক্ষ্মী) বিয়ে করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি প্রথম ঢাকায় আগমন করেন তিন পুত্র (বাপ্পারাজ, বাপ্পি, সম্রাট) দুই কন্যা (শম্পা, ময়না) এবং স্ত্রী খায়রুন নেসাকে নিয়ে কলমাপুর বসতি স্থাপন করেন।
রাজ্জাক নায়ক হিসাবে প্রথম বেহুলা ছবিতে অভিনয় করেন। তার সর্বপ্রথম প্রযোজিত ছবি আকাঙাক্ষা এবং পরিচালক হিসাবে প্রথম ছবি অনন্ত প্রেম, এই পর্যন্ত তার অভিনীত মোট ছবির সংখ্যা প্রায় ৫০০। রাজ্জাকের সেরা প্রাপ্তি ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হওয়া। তার খ্যাতি নায়ক রাজ রাজ্জাক।