হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন বন্ধ ও নদী ভাঙ্গন থেকে মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, স্কুল, গোরস্থান ও ফসলি জমি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনসহ প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা করেছেন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর এলাকাবাসী।
শনিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের এসব সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রতিকারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর এলাকাবাসী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. এমাদ উদ্দিন। এতে তিনি উল্লেখ করেন খরস্রোতা কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে আঙ্গুরা মোহাম্মদ পুরের দুই পারের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। মসজিদ, স্কুল, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, ফসলী জমি, বাড়ি-ঘর ও কবরস্থান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এলাকার সর্বস্তরের মানুষ যখন নদী ভাঙ্গন থেকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে লিপ্ত ঠিক সেই মুহুর্তে একটি মহল সর্বগ্রাসী অবৈধ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে আঙ্গুরা মোহাম্মদপুরের কুশিয়ারা নদীর দুই কুল ধ্বংস করে দিচ্ছে।
অপরিকল্পিত আর স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে যত্রতত্র ভাবে ড্রেজিং করার ফলে আজ এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, বাড়ি-ঘর, ফসলী জমি, রাস্তাঘাট ও কবরস্থান মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
এলাকার সর্বস্তরের মানুষের দাবি ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করে বালু মহল ইজারার নাম করে একটি প্রভাবশালী মহল ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এ অবস্থায় গ্রামবাসী সংগঠিত হয়ে মানববন্ধন সমাবেশ সহ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিয়ানী বাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কুড়ার বাজার ইউপি চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন দপ্তরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
বালু উত্তোলনের জন্য আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর বালু মহলটি মেসার্স হারুন এন্ড ব্রাদার্সের মালিক মো. হারুনুর রশিদ ইজারা নেন। কিন্তু তার পক্ষে আঙ্গুরা মোহাম্মদপুরের মোঃ কালাম উদ্দিন, মো. তজমুল ইসলাম ও উত্তর আকাখাজনা গ্রামের জুবের আহমেদ পেশী শক্তির বলে নদীর কিনারে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করছেন। ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট সহ বিভিন্ন জন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় এলাকার মানুষ নদী ভাঙ্গনের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পেতে যখন ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিক তখনই উপরোক্ত ব্যক্তিরা গ্রামের মুরব্বীয়ানদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও চাঁদা দাবির কাল্পনিক অভিযোগ তুলে তাদের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। উক্ত মহল পত্র পত্রিকা সহ থানা প্রশাসনেও মুরব্বীয়ানদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ পরিবেশন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর আঙ্গুরা মোহাম্মদপুরের হাজার হাজার মানুষের জানমাল রক্ষা এবং অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. নজমুল ইসলাম, মো. ফয়জুল হক, মো. আব্দুস শহীদ, মো. এবাদুর রহমান, মো. আব্দুর রহমান, মো. আলতাব আহমদ, মো. রেজা, মো. হাসনু প্রমুখ।