কখন আপনার নতুন বালিশ প্রয়োজন?

Slider বাধ ভাঙ্গা মত

image-87454-1498980702

 

 

 

 

 

বি.এম. রাসেল: বালিশ ছাড়া ঘুমানোর কথা আমরা কল্পনাই করতে পারিনা। তবে ঘুমানোর জন্য কোন ধরনের বালিশ ব্যবহার করা স্বাস্থ্যকর, এ বিষয়টি নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপক জানান, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সঠিক বালিশের ব্যবহার বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তা না হলে ঘাড়, কাঁধ এসব অঙ্গে ব্যথা হতে পারে। আবার বালিশ নির্বাচনে ফোম ব্যবহার না করে বরং তুলার বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। বালিশ বেশি উঁচু হবে না, আবার খুব নিচুও হবে না। যাহোক, আপনি শেষ বার কখন বালিশটি পরিবর্তন করেছিলেন মনে পড়ে? কিংবা হয়ত আপনি জানেনই না যে বালিশেরও মেয়াদ আছে? আর মেয়াদোত্তীর্ণ বালিশ ব্যবহার করলে আপনার শরীরে ব্যথা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। কাজেই লক্ষণেই বুঝে নিন কখন আপনার নতুন বালিশ প্রয়োজন।

ঘুমানোর ভঙ্গি :আপনার ঘুমের ভঙ্গি দেখে বোঝা যায়, বালিশটি আরামদায়ক কিনা। আপনার ঘুমের ভঙ্গি যদি ঠিক না থাকে এবং ঘুমের সময় যদি আপনার শরীর বিশেষ করে কাঁধ এর আশেপাশের অংশ যদি ঝুলে থাকে তাহলে বুঝতে হবে, আপনার বালিশটি পরিবর্তনের সময় এসে গেছে।

ব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙা: বালিশ দীর্ঘদিন ব্যবহার হতে হতে এর আকার পরিবর্তিত হয়ে যায়। সারা রাত মেরুদন্ড বাঁকা করে রাখলে ঘুম থেকে জাগার পর ঘাড়, কাঁধ বা পিঠে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা কোমর ও হাঁটুতেও ছড়িয়ে যেতে পারে। কাজেই এটাই বালিশ পরিবর্তনের উপযুক্ত সময়।

সকালে সতেজ অনুভব না করা: গভীর ঘুমের সময় মস্তিষ্কের তরঙ্গ ধীর গতির হয়, যা আপানার শরীরকে মেরামত ও পুনরুজ্জীবিত হতে সাহায্য করে। কিন্তু বালিশের কারণে হওয়া ঘাড়ে ব্যথা গভীর ঘুমের ব্রেইনওয়েভে বাধার সৃষ্টি করে।

নিয়মিত মাথাব্যথা: আপনার বালিশটি যদি ঠিক না থাকে তাহলে এর কারণে আপনার শরীরের উপরের অংশে সমস্যা তৈরি হয়। ক্রমান্বয়ে এই সমস্যার ফলে মাথা ব্যথা বাড়তেই থাকে। কাজেই এমনটি হলে অবশ্যই বালিশ পরিবর্তন করুন।

ঘুম থেকে উঠেই হাঁচি দেওয়া: আপনার পুরনো বালিশটিতে ধুলো এবং অ্যালার্জিবাহক জীবাণু জমতে থাকে। যা থেকে অ্যালার্জি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। কাজেই এ ধরণের সমস্যা নিয়মিত হতে থাকলেও বালিশ বদলান।

কেমন বালিশ ব্যবহার করবেন?: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মেডিক্যাল অফিসার ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু বলেন, কে কীভাবে ঘুমায় সেটার ওপর নির্ভর করে বালিশ নির্বাচন করতে হবে। এমনভাবে বালিশ ব্যবহার করতে হবে যেন মেরুদণ্ড সোজা থাকে। সাধারণত বালিশের উচ্চতা চার থেকে ছয় ইঞ্চি হতে পারে। তবে শারীরিক গঠন অনুযায়ী বালিশের উচ্চতা বাড়তে পারে। তিনি বলেন, সাধারণত আমরা তিনভাবে ঘুমাই। কেউ কাত হয়ে, কেউ চিত হয়ে এবং কেউ উপুড় হয়ে ঘুমাই। কাত হয়ে শুলে খেয়াল রাখতে হবে ঘাড় এবং কাঁধে যেন দূরত্ব থাকে। কাত হয়ে শুলে বালিশ একটু উঁচু হতে হবে। যেন মেরুদণ্ড একই লেভেলে থাকে। এক্ষেত্রে একটু শক্ত বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। তবে যেসব বালিশে মাথা একেবারে ডুবে যায়, এগুলোর ব্যবহারে মেরুদণ্ডের অবস্থান ঠিক থাকে না। এগুলো তেমন স্বাস্থ্যকরও নয়। তিনি আরও বলেন, চিত হয়ে শুলে অনেকে মাথার নিচে দুটো বালিশ দেয়। এটি ঠিক নয়। এতে মাথা উঁচু হয়ে থাকে এবং কাঁধে ব্যথা হতে পারে। একটি বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। এছাড়া চিত হয়ে শুলে হাঁটুর নিচে একটি বা দুটো বালিশ রাখা যেতে পারে। আর উপুড় হয়ে শুলে একটু পাতলা বা নরম বালিশ ব্যবহার করতে হবে; এই বালিশের উচ্চতা কম হলে ভালো হয়। যেন ঘাড় এবং মাথা কাছাকাছি থাকে। এক থেকে দেড় বছরের বেশি কোনো বালিশ ব্যবহার করা ভালো নয় জানিয়ে তিনি বলেন, দুই বছর হলে অবশ্যই বালিশ পরিবর্তন করা প্রয়োজন। উলের বালিশ, সিনথেটিক বা ফোমের বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। তুলার বালিশ ব্যবহার করা ভালো। যদি কোনো কারণে বালিশ বেশি নরম হয়ে যায় তখন সেটি পরিবর্তন করতে হবে। শোয়ার সময় মেরুদণ্ডের অবস্থান যেন সোজা থাকে সেটি খেয়ালও কিন্তু সমান জরুরী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *