সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ এক মাস বর্ধিত করায় সৌদি আরবে অবস্থানরত বিদেশি অবৈধ শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। এর মধ্যে রয়েছেন অনেক বাংলাদেশিও। তারা বলছেন, কোনো শাস্তি ছাড়াই তাদেরকে সৌদি আরব ছাড়ার এ সুযোগ বৃদ্ধি একটি সুবর্ণ সুযোগ। তারা বলছেন, এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সৌদি গেজেট
। এর আগে তিন মাসের জন্য সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। সে সময়ের মধ্যে যেসব শ্রমিক সুযোগ গ্রহণ করেন নি তাদের জন্য এক মাস বৃদ্ধি করা হয়েছে সময়সীমা। নির্ধারিত তিন মাসের মধ্যে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এক বিদেশি শ্রমিক। তিনি বলেছেন, এর আগে সাধারণ ক্ষমার সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় আমরা অস্বস্তিতে ছিলাম। কিভাবে জেল ও জরিমানা থেকে মুক্তি পাবো তা নিয়ে চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। এমনই একজন শ্রমিক বাংলাদেশের বশির ওয়ালিউদ্দিন। তিনি দু’বছর যাবৎ জেদ্দায় প্লাম্বার (সিসার জিনিসপত্র তৈরির পেশা) হিসেবে কাজ করছেন। বশির বলেছেন, প্রতিদিন সকালে নতুন কাজ পাওয়ার আশায় জিসর আল উম্মাল ব্রিজের কাছে ছুটে যাই। পরিবহন ভাড়া বাঁচাতে অবস্থান করি এই ব্রিজের আশেপাশে। তার ভাষায়, একটিমাত্র রুমে একসঙ্গে বসবাস করছেন অনেক বাংলাদেশি। বশির বলেন, আমরা এর আগে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিই নি। কারণ, আমরা সৌদি আরব ছাড়তে চাইছিলাম না। তবে এবার আমার বৈধতা নেয়ার কথা ভাবছি। উল্লেখ্য, দক্ষিণ জেদ্দার কিলো ৭ নামক স্থানে জিসর আল উম্মালে (ব্রিজ এলাকা) থাকেন বেশির ভাগ অবৈধ শ্রমিক। সাংবাদিকদের কাছে সেখানকার শ্রমিকরা এবার সুযোগ নেয়ার কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে একজন সোমালিয়ার আসাদ। তিনি নির্মাণ শ্রমিক। তিনি ইকামা (আবাসিক অনুমোদন) ছাড়াই গত ১৮ বছর অবস্থান করছেন সৌদি আরবে। এ সময়ে কয়েকবার তিনি সৌদি আরবে অনুপ্রবেশ করেছেন। এক পর্যায়ে প্রথমবার তাকে জাওজাত বা পাসপোর্ট বিভাগের কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার করে দেশে পাঠিয়ে দেয়। তার আগে তিনি সৌদি আরবে ৭ বছর অবস্থান করে কাজ করেন। আসাদ বলেছেন, এরপর আমি আবার ফিরে আসি সৌদি আরবে। এখন আমি সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিতে চাই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি সৌদি আরব ত্যাগ করতে চাই। কারণ, আমাকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, সৌদি আরবের আইন লঙ্ঘন করার জন্য আমাকে শাস্তি দেয়া হয়, তাহলে আমার ভবিষ্যৎ কি তা জানি না। বর্তমানে আসাদ আরেকজনের সঙ্গে অবস্থান করেন ব্রিজ এলাকায়। প্রতিদিনই সেখানে অপেক্ষায় থাকে যদি কেউ তাকে কাজে নেন। ২৫ বছর ধরে সৌদি আরবে কাজ করছেন মিশরের শাহাতা রমাদান। তিনি আয়রনম্যান এবং রঙমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। শাহাতা বলেছেন, একজন কৃষক হিসেবে আমি এখানে বসবাসের অনুমতি পেয়েছি। আমার স্পন্সর হলেন কাসিম এলাকায় বসবাসকারী একজন সৌদি নাগরিক। ইকামা নবায়নের জন্য তাকে দিতে হয়েছে ৭ হাজার রিয়াল।