গোপালগঞ্জের খবর

Slider ঢাকা

Gopalgonj Photo-1

 

 

 

 

এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জের ৩টি আসনে স্বাধীনতার পর থেকেই আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়ে আসছে। তবে ‘৯৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একজন বিএনপি ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। যার মেয়াদ ছিল মাত্র ২১ দিন।

গোপালগঞ্জের ৩টি আসনেই বিএপির তেমন কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই বললেই চলে। দলে কর্মী না থাকলেও গ্রুপ রয়েছে চারটি। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছে গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি। চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকেই মূলত: বিএনপি’র কোন্দল শুরু হয়। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে জেলা কমিটির মেয়াদ। দূর্বল নের্তৃত্বের কারণে দলে মূল্যায়ন নেই নেতা কর্মীদের। গতিশীল নের্তৃত্বের মাধ্যমে দলকে শক্তিশালী করার যোগ্যতা ও স্বদিচ্ছা বিএনপি নেতাদের নেই বলে অভিযোগ তৃণমূল একাধিক নেতাকর্মীর। ফলে পর্যায়ক্রমে বহুধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে গোপালগঞ্জ বিএনপি।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-১ আসনে মুহাম্মদ ফারুক খান ১ লাখ ৮৩ হাজার ২৩৭ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দী সেলিমুজ্জাম সেলিম পান মাত্র ৯ হাজার ৯৮৬ ভোট। গোপালগঞ্জ-২ আসনে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ সেলিম ১ লাখ ৮৬ হাজার ৫৭৪ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দী বিএনপির বর্তমান সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম পান মাত্র ৭ হাজার ৬৪৩ ভোট। নবম সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দী বিএনপির প্রার্থী এস এম জিলানী পান মাত্র ৪ হাজার ৪শ’ ৫১ ভোট।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জের ভোটার ও মনোনয় প্রত্যাশীদের মধ্যে এখনো কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা চোখে পড়ছে না। তারপরও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কে মনোনয়ন পাবেন, কে পাবেন না এ নিয়ে চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই চলছে নানান ধরনের আলোচনা।

গোপালগঞ্জ-১ (কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর) : আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি এবারও দলীয় মনোনয়ন পাবেন এমনটাই মনে করেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা। (তবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কোনো সদস্য গোপালগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচন করলে সে ক্ষেত্রে তাকে ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট) আসনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে জানা যায়। গোপালগঞ্জ-১ (কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর) আসনে বিএনপির কোনো শক্ত প্রার্থী নেই। এ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সাবেক সাবেক সংসদ সদস্য এফ ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর, বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম (পটু লস্কর) অথবা খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন মেসবাহ দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন।

গোপালগঞ্জ-২ (গোপালগঞ্জ ও কাশিয়ানী) : আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা। এ ছাড়া বিএনপির জেলার সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এইচ খান মঞ্জু, জেলা সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, জেলার সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এফ ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন।

গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারও এ আসনে প্রার্থী হবেন এমনটি প্রত্যাশা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। আর বিএনপি থেকে কাজী আসাদুজ্জামান আসাদ, সেচ্ছাসেবক দল নেতা এস এম জিলানী দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছোট বাহাড়া গ্রামে ব্রীজ নির্মানের দাবী এলাকাবাসীর

এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলা সদর থেকে দক্ষিনের আটাডাঙ্গা বাওড়ের দুরত্ব ১ কিলো মিটারের বেশী। উত্তরের কুমার নদ থেকে একটি শাখা খাল এসে আটাডাঙ্গা বাওড়ের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিনের উজানী গিয়েছে। এই বাওড় ও খালের সংযোগ স্থলে ছোট বাহাড়া গ্রাম, যা বাওড়ের দক্ষিন পাড় দিয়ে গড়ে উঠেছে। খাল এবং বাওড়ের সংযোগ স্থলে পারাপারের জন্য বর্ষা মৌসুমে খেয়া এবং অন্য সময় বাঁশের সাঁকোর উপর নির্ভর করতে হয়। এ গ্রামের উপর দিয়ে দক্ষিনের গ্রাম আদমপুর, রসুলপুর, কৃষ্ণপুর, গোপালপুর, পাথরাইল, গোপ্তরগাতী ও ঝাকোর গ্রামে যেতে হয়। হাট বাজারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে এ ৮টি গ্রাম থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ মুকসুদপুর সদরে যাতায়াত করে।

বাওড়ের উত্তর পাড় পাকা রাস্তা পর্যন্ত যানবাহনে যাওয়া আসা যায়। কিন্তু পাঁকা ব্রীজ না থাকায় খাল পার হয়ে দক্ষিনের ঝাকো পর্যন্ত আরো প্রায় ৫ কিঃ মিঃ রাস্তা পায়ে হেটে যেতে হয়। রুগী নিয়ে বা মালামাল নিয়ে সদরে কিংবা অন্য কোথাও যেতে হলে ভিন্ন রাস্তা দিয়ে আরো প্রায় ৫/৬ মাইল ঘুরে আসতে হয়। এ অঞ্চলের বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন যাবত উক্ত সংযোগ স্থলে একটি পাঁকা সেতুর আবেদন করে আসলে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ কয়েকবার সরেজমিনে গিয়ে দেখে মাপামাপি করে গেলেও বাস্তবে কোন ফল হয়নি।

মুকসুদপুরের কৃতি সন্তান এলজিইডি’র বর্তমান চীফ ইঞ্জিনিয়ার শ্যামা প্রসাদ অধিকারী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভূক্তভোগী ৮টি গ্রামের প্রায় ১৬ হাজার মানুষের দূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে উক্ত স্থানে একটি ব্রীজ নির্মানের উদ্যোগ নিবেন সে আশায় রয়েছেন ভূক্তভোগিরা।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ চাষ করে হামিদা বেগম এখন স্বাবলম্বী

এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ননীক্ষির গ্রামে মাছ চাষ করে হামিদা বেগম স্বাবলম্বী হয়েছে। শ্রম নিষ্ঠা সততা থাকলে কোন বাধাই পথে বাধা হতে পারে না। যেমন পারেনি মুকসুদপুর উপজেলার ননীক্ষির গ্রামের হামিদা বেগমের জীবন।
দুই ছেলে এক মেয়ে ও স¦ামী নিয়ে কোনো রকম ভাবে সংসার চলতো তাদের। এরপর কোন কূল কিনারা না পেয়ে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) সংস্থা থেকে হামিদা বেগম মাত্র ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পোনা মাছ চাষের ব্যবসা শুরু করে। এরপর থেকে তাদের পরিবারের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মাত্র ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে ২০ হাজার এরপর ৩০ হাজার পরিশোধ করে ৫০হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একের পর এক ব্যবসা বাড়াতে থাকেন তিনি। বর্তমানে তার ৬টা পুকুর লিজ নেওয়া আছে তাতে সব মিলিয়ে পুকুর গুলিতে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার মাছ আছে।

হামিদা বেগম সাংবাদিকদের জানান, যখন আমাদের সংসারের হাল বেহাল হয়ে পড়ে ছিলো তখন আমি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (বিডিএস) সংস্থার মুকসুদপুর জলিরপাড় শাখা অফিস থেকে ঋণ নিয়ে মাছের পোনার চাষ শুরু করি। এরপর থেকে আমার সংসারের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। এখন আমার পরিবার নিয়ে আল্লাহ্র রহমতে খেয়ে পড়ে অনেক ভালো আছি।

তিনি আরো বলেন, আমি ৫ লাখ টাকা খরচ করে বাড়িতে থাকার জন্য একটি ঘর দিয়েছি ও ফসলি জমি কিনেছি বর্তমানে আমার ৬টা পুকুরে কাতল, সিলবার, বিভিন্ন মাছসহ ৬/৭ লাখ টাকার মাছ আছে। প্রতি মাসে পুকুর থেকে আয় আসে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) সংস্থার মুকসুদপুর জলিরপাড় শাখা ব্যবস্থাপক বাসুদেব রায় সাংবাদিকদের বলেন, হামিদা বেগম খুবই পরিশ্রমী সে বিডিএস থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। এ ভাবে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এগিয়ে আসা উচিত।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *