ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ২০১৬ সালের জুন মাসের মধ্যে ৩৯ হাজার ৯০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা আছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দশম জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে বুধবার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি উপজেলা বা থানায় অনধিক তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মোট ১ হাজার ৪৯৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া, সাউন্ড সিস্টেম ও ইন্টারনেট মডেম সরবরাহ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে আরো ৩ হাজার ৯৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের জন্য একই রকম উপকরণ বিতরণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৩ হাজার ৫০৪টির জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে আইসিটি শিক্ষার প্রচলন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের মোট ২০ হাজার ৫০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ টু আই প্রোগ্রাম ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় এ পর্যন্ত দেশের প্রাথমিক স্তরের ৩৩টি, মাধ্যমিক স্তরের ৪৯টি, মাদ্রাসা শিক্ষার ৭৫টি এবং কারিগরি শিক্ষার ৩২টি পাঠ্যপুস্তক আকর্ষণীয় ও সহজে ব্যবহারযোগ্য ই-বুকে কনভার্ট করে www.ebook.gov.bd ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা গবেষক এবং শিক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্থা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো সময় পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ ও ব্যবহার করতে পারছে।’
বর্তমানে বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের কলরেট বিশ্বের অন্যতম সর্বনিম্ন হিসেবে বিবেচিত। তাই মোবাইল ফোনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন কলরেট পুনর্নির্ধারণের আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ কে এম শাহজাহান কামালের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান মোবাইল ফোনের কলরেট প্রতি মিনিট সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২ টাকা নির্ধারণ করা আছে। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সহায়তায় একটি কস্ট মডেলিং প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক এ হার নির্ধারিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সব মোবাইল অপারেটরের গড় কলরেট প্রতি মিনিট ৮৩ পয়সা। এটা বিশ্বের সর্বনিম্ন কলরেট হিসেবে বিবেচিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যাপক প্রতিযোগিতার কারণে কলরেট ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। তা ছাড়া ১০ সেকেন্ড পালস বাধ্যতামূলক করায় প্রতি ১০ সেকেন্ড অন্তর বিল চার্জ করা হয়। এতে করে গ্রাহককে শুধু ব্যবহৃত সময়ের প্রতি ১০ সেকেন্ডের গুণিতক হিসেবে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। গ্রাহককে শেষ মিনিটের বাকি সময়ের জন্য বিল দিতে হয় না।’
ফরিদুল হক খানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ সাধারণ মানুষকে সেবা প্রদানে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৪৭টি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি সেন্টারে একজন নারী ও একজন পুরুষ উদ্যোক্তা কর্মরত রয়েছেন। এর ফলে ৯ হাজার ৯৪ জন উদ্যোক্তার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া ৩২১টি পৌরসভায় ৬৪২ জন উদ্যোক্তার কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।’