এক জেএমবি জঙ্গির যোগাযোগ ছিল বঙ্গবন্ধুর খুনির পরিবারের সঙ্গে

Slider জাতীয় ঢাকা

 

 

150138jongibongobondhukhuniporibarjogajog

 

 

 

 

ঢাকা ;  রাজধানীর আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে রবিবার রাতে গ্রেপ্তার হওয়া দুই জঙ্গির একজনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর এক খুনির পরিবারের যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব। সোমবার বেলা ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত রফিকুল ইসলামের সঙ্গে নাশকতার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির পরিবার যোগাযোগ করে। রফিককে জিজ্ঞাসাবাদে ওই খুনির নাম জানা গেলেও তদন্তর স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে মুফতি মাহমুদ খান জানান।

রফিক চট্টগ্রামের একটি মাদরাসার শিক্ষক। বিস্ফোরক আইইডি তৈরিতে সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।

গত ১০ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া এক নারী জেএমবি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া তথ্যে ভিত্তিতেই রবিবার রাতের অভিযানটি চালানো হয় বলে জানায় র‌্যাব। ওই অভিযানে জেএমবির বিস্ফোরক ‘আইইডি’ তৈরির রাসায়নিক পদার্থ সরবরাহকারী দুই জঙ্গি সদস্য মো. ইমরান হোসেন (৩৪) এবং মো. রফিকুল ইসলাম (৪০) গ্রেপ্তার হয়।

রফিক ও ইমরান আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদ ‘হুজি’র সদস্য ছিল। রফিক ২০১৫ সালের শেষের দিকে জেএমবিতে যোগ দেয়। সে প্রতিনিয়ত রাসায়নিক দ্রব্য সংগ্রহ করে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেএমবির বিভিন্ন প্রশিক্ষণকেন্দ্রে সেগুলো পাঠাত। এই বিস্ফোরকের বাহক হিসেবে কখনো সে নিজে থাকত, কখনো আরও কয়েকজন নারী সদস্যও কাজটি করত।

আরাকানের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরাও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত বলে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে রফিক ও ইমরান স্বীকার করেছে।

ইমরানের বাড়ি ময়মনসিংহ। সেখানে সে বিভিন্ন কেমিক্যাল নির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। ২০০১ সালে সে হুজিতে সক্রিয় সদস্য হিসেবে যোগ দেয়। ওই বছর ময়মনসিংহের বুড়ির চরে ২০-২৫ জন যুবককে নিয়ে একটি প্রাথমিক জঙ্গি প্রশিক্ষণ হয়। ওই প্রশিক্ষণে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চট্টগ্রামে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয় ইমরান।

২০১৪ সালে ইমরান জেএমবির সদস্য হয়। ২০১১ সাল থেকে সে জয়দেবপুরে কয়েকটি কেমিক্যাল নির্ভর শিল্পকারখানায় চাকরি করত। এভাবে বৈধ কেমিক্যাল সংগ্রহ এবং সরবরাহ চেইন সম্পর্কে নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সংগঠনের জন্য বিস্ফোরক তৈরিতে রাসায়নিক দ্রব্যাদি সংগ্রহ করত ইমরান। সেসব দ্রব্য বাহক বা কুরিয়ারের মাধ্যমে চাহিদা মোতাবেক চট্টগ্রাম এলাকায় জঙ্গিদের কাছে পাঠাত।

মূলত ইমরানের সরবরাহকৃত রাসায়নিক দ্রব্যের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এ জন্য ইমরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল দ্রব্যাদি যোগাড় করে রফিকের কাছে পাঠাত। আর রফিক সেই কেমিক্যাল চাহিদা অনুসারে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাঠাত।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দুই বোতল সালফিউরিক এসিড, ৫ প্যাকেট বিভিন্ন ধরনের স্প্লিন্টার উপযোগী বল এবং ১ কেজি সাড়ে ৬ শ গ্রাম বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক তৈরির উপযোগী রাসায়নিক পদার্থ (সালফার সদৃশ পাউডার, পটাশিয়াম পাউডার, পটাশিয়াম ক্লোরেট) পাওয়া গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *