হাওর মূল্যবান সম্পদ, একে বাঁচিয়ে রাখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি জাতীয় সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

124440SHEIKH-HASINA

 

 

 

 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর হাওর আমাদের মূল্যবান সম্পদ। হাওরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। হাওরের প্রাকৃতিক অবস্থা বিবেচনা করে উন্নয়ন-অবকাঠামোসহ সবধরনের কাজ করতে হবে। হাওরের একমাত্র ফসলের জন্য নদ-নদী খাল বিল ও ভরাট হওয়া হাওর খনন করতে হবে।

হাওরের এক ফসলের ওপর নির্ভর না করে হাওরে বহুমুখী ফসল উৎপাদনের প্রতি জোর দিয়ে তিনি বলেন, হাওরে শাক-সবজি, ডালসহ নানা ফসলের উৎপাদন বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা খরা ও লবণাক্ত সহিষ্ণু ধান আবিষ্কার করেছি। এখন পানির নিচে গেলেও ফসল নষ্ট হয় না এমন ধান আবিষ্কারের গবেষণা চলছে। প্রধানমন্ত্রী হাওরের ফসলহারা কৃষকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা চিন্তা করবেন না। হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামীতে যাতে সময়মতো বাঁধ নির্মিত হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি হাওরের বাঁধ তৈরি করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টদের।

রবিবার সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা শাল্লা উপজেলার শাহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পাহাড়ি ঢলে ফসলহারা কৃষকের জন্য সহায়তা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কৃষক সহায়তা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ও স্থানীয় সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০টা ৫ মিনিটে হেলিকপ্টারে অবতরণ করেন। ১১টা ৩ মিনিট থেকে ১১টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত তিনি হাওরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নানা সহায়তার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি ব্যাংক কৃষকের ঋণের সুদ অর্ধেক মওকুফ করেছে। স্থগিত করেছে কৃষিঋণ আদায়। আমি শুনেছি এনজিওরা হাওরের দুর্গত কৃষকদের ঋণ আদায়ে চাপ দিচ্ছে। আমি এনজিও ব্যুরোকে নির্দেশ দেব যাতে তারা ঋণের জন্য আমার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্থগিত করেনি।

হাওরবাসীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ঐতিহ্য স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাওরের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে যুদ্ধ করে টিকে আছে। প্রতিনিয়ত পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাওরের কৃষক। একমাত্র ফসল চলে গেলে তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ে। তিনি বলেন, আপনাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্যই আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছিলেন। আমিও ১৯৭৫ সনের এক রাতে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে এখন আপনাদের মুখে হাসি ফুটানোর কাজ করছি। হাওরের চাষিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না। আগামী ফসল ঘরে না ওঠা পর্যন্ত আপনাদের সহায়তা অব্যাহত রাখব। আগামী ফসলের জন্য বিনামূল্যে সার, বীজ ও কৃষি উপকরণ দেওয়া হবে। অব্যাহত রাখা হবে অন্যান্য কৃষি ভর্তুকি। প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি ইউনিয়নে ওএমএ সুবিধা পৌঁছে দেবার নির্দেশনা দেন মঞ্চে থাকা খাদ্যমন্ত্রীকে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে যত খাবার নষ্ট হয়েছে তা সরবাহের নির্দেশ দেন মন্ত্রীকে।

গো-খাদ্য নিয়ে শঙ্কিত ফসলহারা কৃষকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের গো-খ্যদ্যর ব্যবস্থা করব। আমি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা দিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *