গাজীপুর নগর ভবনে মেয়রের চেয়ারে কে বসছেন, মান্নান? না কিরণই!

Slider গ্রাম বাংলা টপ নিউজ

18034678_538441766326550_430611562_n

 

 

 

 

 

 

 

 

সামসুদ্দিন, গাজীপুর অফিস: ভারপ্রাপ্ত মেয়র না মেয়র, চেয়ারে বসবেন তা নিয়ে গাজীপুর নগর ভবনে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। উচ্চ আদালত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়ার পর থেকেই এই অবস্থা দেখা দিয়েছে। কে মেয়রের চেয়ার বসছেন, ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ না মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান, এটা নিয়েই চলছে জল্পনা কল্পনা। উচ্চ আদালতের রায় হওয়ার পরও মেয়র কক্ষে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের নাম খঁচিত নেম প্লেট রয়েছে। এই নিয়ে কেউ মুখও খুলছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, উচ্চ আদালত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে দেয়া সরকারের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে ওই আদেশ কেন বে-আইনী ঘোষনা করা হবে না মর্মে রুল জারী করে। ওই রুলের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করারও প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু ইতোপূর্বে এই ধরণের আপলি নো অর্ডার দিয়ে খারিজ করার ফলে একাধিক জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব ফিরে পান। ফলে গাজীপুর সিটিকরপোরেশনে মেয়র মান্নানকে চেয়ারে বসতে না দেয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীন হয়ে আসছে। এই অবস্থায়, গাজীপুর নগর ভবনে মেয়রের রুমটি বন্ধ রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত মেয়রও আগের মত অফিসে আসছেন না। আর মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানও চেয়ারে বসছেন না। ফলে নগর ভবনের স্বাভাবিক কর্মকান্ডে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। নগর ভবনে গিয়ে দেখা যায়, মেয়রের স্বাক্ষর কি ভাবে পাওয়া যায়, তা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। কেউ কেউ গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক অফিসে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে খুঁজছেন। অনেকে বলছেন, ভারপ্রাপ্ত মেয়র ফোনও তেমন ভাবে ধরছেন না। অধিক পরিচিত কিছু লোক ছাড়া কেউ ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে ফোনেও পাচ্ছেন না। ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের একটি বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে, কিরণ আপলি করানোর জন্য ব্যস্ত আছেন। আর মেয়র অধ্যাপক মান্নানের সূত্র জানায়, তারা পাকাপোক্তভাবে সকলকে জানিয়ে ঘটা করে নগর ভবনে আসছেন। জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গ কিলোমিটার। এখানে প্রায় ২৫ লাখ লোকের বাস। শিল্প-কারখানায় কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন জেলা থেকে আরও প্রায় ছয় লাখ মানুষ প্রতিদিন এ জেলায় আসে। শিল্প-কারখানাসমৃদ্ধ গাজীপুর সিটি করপোরেশন আগের গাজীপুর ও টঙ্গী পৌরসভা এবং পুবাইল, বাসন, গাছা, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, কাউলতিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি। ওই বছরের ৬ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নগরবাসী বহু প্রত্যাশা নিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। এরপর বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক এম এ মান্নানকে ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএসের বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট প্রথম দফায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সে আদেশ ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল হাই কোর্ট স্থগিত করে। ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগে হাই কোর্টের আদেশ বহাল থাকে। এরপর দায়িত্বে ফেরার আগেই ওই বছরের ১৫ এপ্রিল অধ্যাপক এম এ মান্নানকে ফের গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ এপ্রিল তাকে দ্বিতীয় দফায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মান্নান উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। অধ্যাপক মান্নানের অবর্তমানে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *