ট্রাম্প সরকারের সিদ্ধান্তে আমেরিকায় কাজ হারাতে পারেন লাখ দুয়েক বিদেশি

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাবিশ্ব

image

 

 

 

 

 

ছর পনেরো আগে কলকাতা থেকে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিয়েছিলেন সুদর্শনা সেনগুপ্ত। চোখে একরাশ স্বপ্ন। নতুন দেশে সাজানোগোছানো ভবিষ্যতের হাতছানিও ছিল। শুরুটা ভালই হয়েছিল ২৮ বছরের সুদর্শনার। কেন্টাকির লুইসভিলে সংসারও পেতেছিলেন সাধক সেনগুপ্তের সঙ্গে। সে সময় পোস্ট ডক্টোরাল ফেলোশিপ পেয়েছেন সাধক। গবেষণার কাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই সেরা জায়গা বলে মনে হয়েছিল তাঁর। বছর পনেরো পরে মোটা মাইনের কেরিয়ারের সঙ্গে সঙ্গে নিজের ব্যবসা শুরু করার কথাও ভাবতে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু, তা বোধহয় এখন দুরাশায় পরিণত হতে পারে। ওবামা প্রশাসনের জারি করা ভিসা সংক্রান্ত একটি নির্দেশ বিবেচনা করে দেখছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সুদর্শনা-সহ আরও লাখ দুয়েক অভিবাসীর ভবিষ্যৎ। সেই নির্দেশ কার্যকরী হলে আমেরিকায় কর্মরত উচ্চশিক্ষিত বিদেশি দম্পতিদের মধ্যে এক জন কাজের অধিকার হারাতে পারেন।

আমেরিকায় গিয়ে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর একটি ল্যাবরেটরিতে কাজ করা শুরু করেন সুদর্শনা। সে কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মোটা মাইনের চাকরিও জুটে যায় তাঁর। সে সময়ই এইচ-১বি ভিসার আবেদন করেন তাঁর স্বামী সাধক। সালটা ২০০৫। এর বছর পাঁচেক পরেই অভিবাসন ভিসার পেয়ে যান তিনি। ফলে গ্রিন কার্ড পেতেও যে আর দেরি হবে না সে আশা ছিল তাঁদের। শিকাগো, ইন্ডিয়ানাপোলিসে কিছু দিন কাজের পর ২০১১-তে বস্টনে গিয়ে বসবাস করা শুরু করেন সেনগুপ্ত দম্পতি। কিন্তু, ২০১৩-তে তাঁর এইচ-১বি ভিসার সময়সীমা ফুরোলে সে দেশে কাজ করার অধিকার হারান সুদর্শনার। কিন্তু, বছর দুয়েক পরেই আশার আলো দেখতে পান তিনি।

আরও পড়ুন

২০১৫-তে এক নির্দেশ জারি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামা। তাতে বলা হয়েছিল, এইচ-১বি ভিসাধারী ও গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন এমন দম্পতিদের এক জনের অনির্দিষ্ট কালের জন্য আমেরিকায় কাজ করায় আর কোনও বাধা থাকবে না। ফের কাজ করতে শুরু করেন সুদর্শনা। কিন্তু, ভিসা সংক্রান্ত বিষয়টি ফের আইনি প্যাঁচে জড়িয়ে পড়ে। এইচ-১বি ভিসাধারী বিদেশি কর্মীদের কাছে কাজ হারিয়ে মামলা করেন ক্যালিফোর্নিয়ার এক দল আইটি কর্মী। তাঁদের যুক্তি ছিল, ওই ভিসা আইনের চাপে পড়েই কাজ হারাচ্ছেন মার্কিনিরা। কিন্তু, পরের বছর নিম্ন আদালতে সেই যুক্তি খারিজ হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও ফের ওই আইন বদলের আবেদন করেন ওই কর্মীরা। তাঁদের আশা ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার ওই ভিসা নিয়মে পরিবর্তন আনবেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন তা-ও প্রকাশ্যে এসে পড়ে গত জানুয়ারিতে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক নির্দেশের একটি খসড়া ফাঁসও হয়ে যায়। সরকার গড়ার পরই এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তার জল্য ৬০ দিনের সময়ও চেয়ে নেন ট্রাম্প। আগামী সোমবার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। তবে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট মার্কিন আদালতে আবেদন করেছে, বিষয়টি নিয়ে আরও পর্যালোচনার জন্য তা আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ আরও ছ’মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *