কলকাতা; ফের সংবাদের শিরোনামে বাংলাদেশের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মহম্মদ আলি। এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী হামিদা বিবি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই কলকাতা পুলিশের এসটিএফ বুধবার আদালতের নির্দেশে চারদিনের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে তাকে। সুব্রত দীঘদিন ধরেই দমদম সেন্ট্রাল জেলে রয়েছে।
সুব্রতর স্ত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, জেলে বসেই সুব্রত জঙ্গী ছক কষছে। সেই কাজে বাধা দিলে স্ত্রীকেও খুন করার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন হামিদা বিবি। হামিদা বিবি তার ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে রাজারহাটের নারায়ণপুরে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী সুব্রত বায়েনের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এরপরই সে পালিয়ে এসেছিল ভারতে। কলকাতায় বসেই সে তোলাবাজির কাজ চালাতো বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ ছিল। কলকাতার নানা প্রান্তে সে বিশাল সম্পত্তিও গড়ে তুলেছিল। নিউ টাউনের চিন ার পার্কের কাছে একটি বাড়িও তৈরি করেছিল। খুলেছিল কাপড়ের দোকান। সেই সময় পরিবার নিয়ে এই বাসাতেই থাকত সুব্রত। তবে ২০০৮ সালে কলকাতা পুলিশ সুব্রতকে কড়েয়া থানা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিছুদিন জেলে থাকার পর সে জামিন পেয়ে গিয়েছিল। এ কারণে পালিয়ে গিয়েছিল উত্তরবঙ্গে। সেখানে পুলিশ তাকে ধাওয়া করলে সে সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে ঢুকে পড়েছিল। সেখানেই সে নেপাল পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল। তবে নেপাল থেকে সে কয়েকজন বন্দীর সঙ্গে মিলে জেল থেকে সুড়ঙ্গ তৈরি করে পালিয়ে গিয়েছিল । ফিরে এসেছিল কলকাতাতেই। তবে এবারও সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গিয়েছিল। এরপর থেকে সে দমদম জেলে ছিল। কিন্তু জেল থেকেই সে জেএমবির জঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেছিল বলে অভিযোগ। সুব্রতর স্ত্রী এসটিএফকে অভিযোগ করেছেন, কয়েকদিন ধরে তাদের বাড়িতে কিছু অপরিচিত লোকজনের যাতায়াত শুরু হয়েছে। এদের কথা শুনে হামিদা বিবির মনে হয়েছে তারা সবাই বাংলাদেশি। এরা ভারতে থাকার কাগজপত্রও তৈরি করছে। সুব্রতই তাদের সহায়তা করছে। তবে হামিদা এদের বাড়িতে থাকতে দিতে আপত্তি করায় সুব্রত জেল থেকে ফোনে তাকে খুনের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। পুলিশকে হামিদা বিবি জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন এসব লোকজন জেএমবির সঙ্গে যুক্ত বলে তার মনে হয়েছে। তার আরও অনুমান, সুব্রত এদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশে বড় ধরণের নাশকতার ছক কষছে। হামিদা বিবির অভিযোগ পেয়েই আলিপুরের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের কাছে সুব্রত বাইনকে ১৪ দিনের জন্য রিমান্ডে নেবার আবেদন জানিয়েছিল। বুধবার বিচারক অবশ্য চারদিনের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। বৃহষ্পতিবার থেকেই এসটিএফ সুব্রতকে নিয়ে সন্দেহভাজনদের খোঁজে বিভিন্ন ডেরায় হানা দেবার পরিকল্পনা করেছে বলে সূত্রে জানা গেছে। তবে আদালতে সুব্রতর হয়ে আইনজীবী দেবার ঘটনাটিও পুলিশ নজরে রেখেছে বলে জানা গেছে। সুব্রতর হয়ে আইনজীবী সুব্রত গুহঠাকুরতা আদালতে পুলিশ রিমান্ডে নেবার ব্যাপারে নানা আপত্তি তুলে ধরেছিলেন। আদালত অবশ্য সেই আপত্তি খারিজ করে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুব্রতকে এসটিএফের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।