সরকার চাইলে যেকোনো সময় নির্বাচন দিতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ফুলজান বিবির বাংলা

 

82094_Hasina-pm-1-full2

গ্রাম বাংলা ডেস্ক:৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি যে যার মতো করে বুঝেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওই নির্বাচনের আগে আমি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা বলেছি সত্য। কারণ, নির্বাচন অনুষ্ঠানে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা তো থাকেই। একটা নির্বাচনের পর আরেকটা নির্বাচন আসে, এটাই স্বাভাবিক। একটা নির্বাচনের পর সরকার চাইলে যেকোনো সময় আবারো নির্বাচন দিতে পারে। তবে সাংবিধানিকভাবে মেয়াদ পাঁচ বছর। তাই পরের নির্বাচনও সময়মতোই হবে। আমি সেটাই বুঝিয়েছিলাম। এখন সেটা নিয়ে যে যার মতো বুঝতে পারে। আমি তো বুঝিয়ে দিতে পারব না।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) সাম্প্রতিক সফরের ওপর বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে সব রকম চেষ্টাই করেছি আমি। সংলাপের আহ্বান জানিয়েছি, ফোন দিয়েছি। কিন্তু তারা আসল না, বরং ঘোষণা দিল নির্বাচন প্রতিরোধের।
শেখ হাসিনা বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে কী হতো! ১/১১ এর ধাক্কা তো এর আগে সমলাতে হয়েছে। সে কথা আপনাদের সবার মনে আছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জনগণ ভোট দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য সরকার নির্বাচন করে। এর আগে কোনো সরকারই পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকেনি। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে আমরাই প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলাম।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর উদ্বেগের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জানা উচিত, মানবতাবিরোধী অপরাধের যে বিচার হচ্ছে তা আমাদের দেশীয় আইনে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে হচ্ছে। এ বিচার নতুন নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিচার এখনো করছে তারা। আর আমাদের দেশে মানববতাবিরোধীদের বিচার হলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে, কিন্তু ইসরাইল যখন গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করে তখন তাদের উদ্বেগ কোথায় ছিলো?
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত কোনো প্রশ্ন তুলেছে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা বা প্রশ্ন তোলা হয়নি। তবে হ্যাঁ, যে কোনো বিষয়ে তাদের নিজস্ব ক্ষমত থাকতে পারে। আর কোনো একটি দলের সাথে কোনো একটি দেশের বিশেষ বন্ধুত্বও থাকতে পারে।
সংবিধানে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমার ধারাটি রহিত করা হবে কীনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রপতির একটা অধিকার থাকে, থাকতেই হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করতে হলে এ ধরণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর আরব আমিরাত সফর ব্যর্থ হয়েছে-বিএনপির এমন দাবির বিরোধীতা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নিজেরাই ব্যর্থ, নির্বাচনে আসতে পারেনি, মানুষ খুন করে নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হলো, আন্দোলন সফল করতে পারলোনা এবং যারা প্রতি পদে পদে ব্যর্থ হলো সব জায়গায় ব্যর্থতা দেখা তাদের মজ্জাগত। তারা ব্যর্থতা দেখতে থাকুক আর আমরা দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাই। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ে উন্নীত করেই আমার ছুটি এবং তা ২০২১ সালের আগেই হবে।
সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জীবনের বর্ধিত সময় পার করছি। এ জীবন নিয়ে আর উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বারবার আমার ওপর হামলা করা হয়েছে, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছি, মহান আল্লাহই আমাকে বাঁচিয়েছেন। তিনি যতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন ততদিনই বাঁচবো। মৃত্যুকে আমি কোনো ভয় পাইনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিদের ঘাঁটি ছিলো। আমরা তা বন্ধ করেছি। এখন পত্র পত্রিকায় শুনেছি তারা ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশে আক্রমন করতে চায়। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। এ ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান হচ্ছে। এ বিষযে আর কিছু জানাতে চাইনা।
সংবাদ সম্মেলনে আরব আমিরাত সফরের বিস্তারিত তুলে ধরে প্রদানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে নতুন করে শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে সেখানে আলোচনা হয়েছে। এক হাজার নারী কর্মী নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *