স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মালঞ্চা গ্রামের মৃত ওসমান মুনশির ছেলে জাহাঙ্গীর। ওসমান মুনশি কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন। প্রায় তিন বছর আগে তিনি মারা যান। ওসমান মুনশির দুই স্ত্রী। জাহাঙ্গীর প্রথম স্ত্রী রাহেলা বেগমের ছেলে।
প্রায় ১৩ বছর আগে রাহেলা বেগম ওরফে হালিমা তাঁর সন্তানদের নিয়ে মালঞ্চা গ্রামে বসবাস শুরু করেন। রাহেলা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে জাহাঙ্গীর তৃতীয়। তাঁর বড় ভাই আবু তাহের (৪২) গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরে ভাড়া বাসায় থেকে ফার্নিচারের ব্যবসা করেন। দ্বিতীয় ভাই আলী হোসেন (৩৮) মালঞ্চা গ্রামে পৃথক বাড়িতে থাকেন। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। দুই বোন রেজওয়ানা খাতুন ও সান্ত্বনা খাতুনের বিয়ে হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলমের দুই ছেলে এক মেয়ে।
শনিবার দুপুরে গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে মালঞ্চা গ্রামে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে গ্রামবাসী ও আশপাশের লোকজন বলেন, জাহাঙ্গীরের মা আজ (শনিবার) সকালে মেয়ের বাড়ির কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। তাঁরা আরও বলেন, জাহাঙ্গীর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। তিনি এই বাড়িতে নিয়মিত থাকতেন না। রাতে আসতেন আবার সকালে চলে যেতেন।
একপর্যায়ে পুলিশ ওই গ্রামে জঙ্গি অভিযান শুরু করলে জাহাঙ্গীর পরিবার নিয়ে গা ঢাকা দেন। জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই আবু তাহের বলেন, ‘ভাইকে গ্রেপ্তারের কথা শুনেছি। প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন বছর ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে জাহাঙ্গীর বাড়ি থেকে চলে যায়। তার সঙ্গে আমাদের পরিবারের কোনো যোগাযোগ নেই।’ আবু তাহের আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের কর্মকাণ্ডের কথা শোনার পর থেকে আমরা তাকে ঘৃণা করি। সে অন্যায় করে থাকলে তার শাস্তি হোক, সেটা আমরা চাই।’
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাহাঙ্গীর আলম জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরের মধ্যপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী তরুণ দত্ত (৩৮) এবং গত ২৫ মে সকালে একই উপজেলার মহিমাগঞ্জ বাজারের জুতা ব্যবসায়ী দেবেশ চন্দ্র প্রামাণিক (৬৮) হত্যা মামলার আসামি। এই দুই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে জাহাঙ্গীরের নাম আছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।