রংপুর: রংপুর সদর হাসপাতাল হরিজন কলোনী উচ্ছেদের পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেছে হরিজন কলোনীবাসী।
কাচারী বাজার চত্বরে হরিজন কলোনীবাসী আমরীলাল বাসফোর এর সভাপতিত্বে সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন হরিজন সিংহাসন বাসফোর, নান্টু বাসফোর, মানুলাল বাসফোর, সিলিপ বাসফোর, ছটু বাসফোর, সুজন বাসফোর, সাজু বাসফোর প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রংপুর সদর হাসপাতাল ও শ্যামা সুন্দরী খাল সংলগ্ন জমিতে প্রায় ২০০ বছর যাবত আমরা বসবাস করে আসছি। এখানে আমাদের প্রায় সহস্রাধিক পরিবারের বাস। আমরা সকলেই পেশায় পরিচ্ছন্নতা কর্মী। আমরাই এই শহরকে মানুষের বাসযোগ্য করে তুলি। সীমিত আয়ের উপর নির্ভর করে পরিবার পরিজন নিয়ে আমাদের মানবেতন জীবন যাপন করতে হয়। অর্থাভাবে সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারি না, অসুস্থ হলে চিকিৎসার সাম্যর্থ্য আমাদের অনেক সময়ই থাকে না। খেলাধুলা, বিনোদন আমাদের সন্তানদের জীবনে দঃস্বপ্নের মতো। তার উপর সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদকসেবীদের উৎপাততো আছেই। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে আমাদের যেন কোন মৌলিক, গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। অবমাননা, বঞ্চনা আমাদের জীবনের নিত্য সঙ্গী। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়েছি আমাদের স্থায়ী পুনবার্সনের ব্যাপারে। কিন্তু সর্বত্রই শুধু আশ্বাস ও শান্তণার বাণী ছাড়া কার্যকর কোন কিছুই হয়নি। এমতাবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মহোদয় আমাদের ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে উক্ত কলোণীর জমি খালি করে ঘরবাড়ী ভেঙ্গে চলে যাওয়ার নোটিশ দিয়েছেন। আমাদের পুনর্বাসন না করে এখান থেকে উচ্ছেদ করলে পরিবার- পরিজন নিয়ে পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না। কারণ আমাদের নিজস্ব কোন ভিটা-মাটি নেই।
বক্তারা, রংপুর সদর হাসপাতাল হরিজন কলোনী উচ্ছেদের পাঁয়তারা বন্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন।