একটা জামা হবে!”
—>এহসানুর রহমান আক্তাবুর
একটা জামা হবে সাহেব!
একটা পুরাতন জীর্ণ জামা?
না না আমার জন্য নয়,
এই হতচ্ছাড়া মেয়েটার জন্য।
শীত আমাকে কাবু করতে পারেনা,
এ আমার সর্বংসহা দেহে সয়ে গেছে।
গেল বছর কেঁপে কেঁপে হজম করে নিয়েছি
শৈত্যপ্রবাহের কনকনে শীতের ঘৃণাভরা দৃষ্টি।
আচ্ছা, শীত আমাদের এতো ঘৃণা করে কেনো?
শুধু শীত কেনো? কাঠ ফাটা রোদ, বৃষ্টির দাপট,
ঝড়ের তান্ডব সব,
সব আমাদের জন্য ঘৃণা নিয়ে আসে।
সব ঘৃণা হজম করি আমি, কিন্তু মেয়েটা!
হ্যাঁ, তার নাম- হা হা হা হা হ্! হাসছি কেনো?
হাসবোইতো, মেয়েটা আমার বোন ‘দীপ্তিরাণী’।
যার নাম রাণী তার জন্য জামা ভিক্ষা করছি,
যার জীবন অন্ধকারের গহবরে নিমজ্জিত তার নাম দীপ্তি,
কতো বেমানান!
আমার মতো ধৈর্য ক্ষমতা দীপ্তিরাণীর হয়নি এখনো,
নিষ্ঠুর শীত যখন ওর গায়ে কাঁপন তোলে
তখন তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখি,
এতে আর কতক্ষণ চলে?
রাস্তায় দুই ধারে পড়ে থাকা নোংরা কাগজ,
খড়কুটো জড়োকরে আগুন জ্বালিয়ে দেই শীতের কপালে,
দীপ্তির মলিন ফ্যাঁকাসে মুখে ফোকলা হাসি ফোটে।
আমিও হাসি।
দীপ্তির হাসিটা প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখার সাথে উঠানাম করে।
একসময় প্রজ্জ্বলিত শিখাটা নিভে যায়,
সেই সাথে মিলিয়ে যায় ফোকলা হাসিটাও।
তাই তার জন্য একটা জামা, দেবেন স্যার!
ফেলে দেবার মতো পুরাতন? হোকনা,
এতেই চলবে।
তবে একটু মোটা হলে বেশী ভালো হয়।
দেবেন সাহেব!
একটা পুরাতন জীর্ণ জামা!!
রচনাঃ ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ।