মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল খারিজ করে আজ বুধবার এই রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ।
রায়ে আদালত বলেন, ‘আপিল খারিজ।’
আপিল বিভাগেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকা বাকি দুই আসামি হলেন শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
হান্নান ও শাহেদুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আলী। অপর আসামি দেলোয়ারের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা।
পরে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুই আসামি আপিল করেছিলেন। অপর আসামির জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী দেওয়া হয়। আপিল বিভাগ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। হাইকোর্টে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামি আপিল করেননি। তাই তাঁদের দণ্ড বহাল রয়েছে। এই মামলায় পাঁচ আসামি কারাগারে আছেন।
হান্নান ও শাহেদুলের আইনজীবী মো. আলী বলেন, আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হবে।
ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের প্রধান ফটকের কাছে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক আবুল হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল হাই খানসহ প্রায় ৭০ জন আহত হন।
এই মামলায় হান্নান, শাহেদুল ও দেলোয়ারকে মৃত্যুদণ্ড দেন সিলেটের একটি আদালত। হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ের পর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও নিম্ন আদালতের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে হান্নানসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকে।
চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা তিন আসামির মধ্যে হান্নান ও শাহেদুল ১৩ জুলাই আপিল করেন। আপিলের ওপর ৩০ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়। আজ রায় ঘোষণা করা হলো।